যমজ সন্তানের বাবা হয়েছিলেন কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ জানারঘোনার ফুটখালী গ্রামের হাকিম উল্লাহ হাসেম। তবে তার সন্তানদের দেখতে আসেননি শ্বশুর আজিজুল হক। এতে মনে ক্ষোভ ছিল হাকিম উল্লাহর।
কয়েকদিনের ব্যবধানে দুটি সন্তানই মারা যায়। মৃত্যুর পর সন্তানদের দেখতে আসায় শ্বশুরকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে খুন করার অভিযোগ উঠেছে জামাই হাকিম উল্লাহর বিরুদ্ধে। বাধা দিতে গিয়ে আহত হয়েছেন তার স্ত্রী সোনিয়া আক্তার।
শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ জানারঘোনার ফুটখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জামাতা হাকিম উল্লাহ হাসেমকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত শশুর আজিজুল হক একই এলাকার বাসিন্দা।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক সপ্তাহ আগে হাকিম উল্লাহ যমজ সন্তানের বাবা হন। জন্মের তিনদিন পর এক সন্তান মারা যায়। শুক্রবার সকালে অন্য সন্তানটিও মারা যায়। দুপুরে নাতির মৃত্যুর খরব শুনে দেখতে যান আজিজুল হক। এসময় সন্তান হওয়া পর কেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন দেখতে যায়নি এবং মারা যাওয়ার পর কেন দেখতে গেলেন, এ নিয়ে শ্বশুর ও জামাতার মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়।
একপর্যায়ে জামাতা হাকিম উল্লাহ ঘরে থাকা ধারালো ছুরি নিয়ে এসে শ্বশুরকে উপর্যুপরি আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
তবে স্থানীয়দের আরেকটি পক্ষের তথ্যমতে, হাকিম উল্লাহ তার শ্বশুর আজিজুল হকের জায়গায় অস্থায়ী ঘর তৈরি করে বাস করে আসছেন। দুপুরে নাতির মৃত্যুর খরব শুনে দেখতে যান আজিজুল হক। এসময় জায়গা নিয়ে কলহের জেরে শ্বশুর-জামাতার তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে জামাতা হাকিম উল্লাহ শ্বশুরকে ছুরিকাঘাত করেন। এতে বাধা দিতে গেলে স্ত্রী সোনিয়া আক্তারকেও মারধর করা হয়।
স্থানীয়রা আহত আজিজুল হক ও সোনিয়া আক্তারকে উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আজিজুল হককে মৃত ঘোষণা করেন।
দক্ষিণ জানারঘোনা এলাকার সমাজপতি (সর্দার) আব্দুর রহমান বাবু বলেন, হাকিম উল্লাহ শ্বশুরের মালিকানাধীন জায়গায় ঘর তৈরি করে থাকতেন। শ্বশুর জায়গা ছেড়ে দেওয়ার কথা বললে জামাতার সঙ্গে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এর জেরেই খুনের ঘটনা ঘটেছে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পরপরই হাকিম উল্লাহকে আটক করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।