রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া যৌনপল্লিতে এক শিশুকে (১৪) বিক্রির চেষ্টাকালে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শিশুটির বাড়ি রাজশাহীর কাটাখালি থানা এলাকায়।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) দিবাগত রাতে যৌনপল্লির এক বাড়ি থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার।
স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, বুধবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার এবং দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। রাতেই শিশুটির বাবা মানবপাচার আইনে মামলা দায়ের করেন। অন্য দুই আসামি চম্পা বেগম ও আপন মণ্ডল পলাতক রয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রেপ্তার আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়। অন্যদিকে শিশুটিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন, ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার চরচান্দা গ্রামের খান শহিদুল ইসলামের ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন জাহিদ (৩৫) ও বগুড়ার শেরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর যমুনাবাড়ি এলাকার মকবুল হোসেনের ছেলে মো. জসিম উদ্দিন (২২)।
জানা গেছে, শিশুটির বাবা স্থানীয় বাজারে দর্জির দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করেন। বাবাকে সহযোগিতা করতে স্থানীয় এক পরিচিতের মাধ্যমে প্রায় দুই মাস আগে সাভার আশুলিয়ার কাঁঠালতলার একটি গেঞ্জি কারখানায় কাজ নেয় শিশুটি। এক মাসের বেশি কাজ করার পর কারখানা বন্ধ হয়ে যায়।
কারখানায় জসিম উদ্দিন ও বগুড়ার খামাড়কান্দি শাপগ্রামের আপন মণ্ডল নামে দুইজন কাজ করত। শিশুর মাসিক বেতনের দায়িত্বভার পড়ে কারখানার লাইন্সম্যান জসিম উদ্দিনের ওপর। বেতন না দেওয়ায় শিশুটির বাবা ৯ অক্টোবর আশুলিয়া থেকে তার মেয়েকে বাড়ি নিয়ে যান।
এরপর ২২ অক্টোবর রাতে আসামি আপন মণ্ডল ফোন করে শিশুটিকে জানায়, তোমার বেতন হয়েছে এবং নতুন চাকরির ব্যবস্থা করেছে। এ কথা বলে তাকে বেতন নিয়ে যেতে বলে। কথামতো মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) আপনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে রাত ৮টার দিকে সাভার জামগড়ায় আসতে বলে।
জামগড়ায় পৌঁছালে আসামিরা আশুলিয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসে দৌলতদিয়া নিয়ে যায়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাকে দৌলতদিয়া যৌনপল্লির চম্পার বাড়িতে আত্মীয় পরিচয় দিয়ে রেখে পরদিন সকালে নতুন কর্মস্থলে নিয়ে যাবে বলে জানায়। পরদিন বুধবার আসামিরা তাকে পতিতাবৃত্তির কথা বোঝাতে থাকলে শিশুটি কান্না করতে থাকে। স্থানীয় লোকজন বুঝতে পেরে থানা-পুলিশকে খবর দেয়। বিকেলে অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।