রাজবাড়ীতে চলন্ত প্রাইভেটকারে এক গৃহবধূকে সাবেক স্বামীসহ তার বন্ধুদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূর অভিযোগ, মানিকগঞ্জ থেকে তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে অচেতন করে পালাক্রমে ধর্ষণ করে একটি নির্জন জায়গায় হাত-পা বেঁধে ফেলে রেখে যাওয়া হয়।
গত শনিবার (১২ মার্চ) এ ঘটনা ঘটলেও মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) মামলা দায়েরের পর তা জানাজানি হয়।
মামলায় প্রধান অভিযুক্ত করা হয়েছে, ওই গৃহবধূর সাবেক স্বামী মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার টুটিয়াম গ্রামের সৈকত আলীর ছেলে আল-মামুন রশিদ (৩৮)। এছাড়া অপর অভিযুক্তরা হলেন, বরিশাল বিমানবন্দর থানার গণপাড়া গ্রামের আব্দুল হাসেম মাঝির ছেলে আব্দুর রব মুন্না (৪৫), হাসু (৩৪) ও রিয়াজ (৩৫)। মামলায় তাদের আল-মামুন রশিদের বন্ধু উল্লেখ হয়েছে।
মামলায় উল্লেখ, ওই গৃহবধূর (৪৫) বাড়ির মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে। ২০১৮ সালে আল-মামুন রশিদের সঙ্গে তার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। মামলায় অভিযোগ করে বলা হয়, বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে প্রায়ই গৃহবধূকে মারপিট করা হতো। পরে গত ২০২১ ওই গৃহবধূ মামলা করেন। এরপর ওই মামলায় আদালত থেকে মামুন জামিন পাওয়ার পর গত বছর ১৫ নভেম্বর তাকে তালাক দেন।
মামলায় ওই গৃহবধূ জানান, গত শনিবার (১২ মার্চ) বিকেলে বাবার বাড়ি থেকে মানিকগঞ্জ ঘিওর থানার সিনজুরী গ্রামে যাচ্ছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে ঘিওর পাঁচ রাস্তার কাছে ফাঁকা জায়গায় পৌঁছলে সাবেক স্বামী আল-মামুনসহ তিন বন্ধু মিলে তাকে জোর করে সাদা রঙের একটি প্রাইভেটকারের পেছনে তুলে নেয়। কিছুক্ষণ পর জোর করে কোমল পানির সঙ্গে নেশা জাতীয় কিছু পান করালে তিনি জ্ঞান হারান এবং তাদের ধর্ষণের শিকার হন। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের একটি ফাঁকা জায়গায় তাকে হাত-পা বেঁধে ফেলে যাওয়া হয়। এসময় চিৎকারে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে পুলিশকে খবর দেয়।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ স্বপন কুমার মজুমদার জানান, খবর পেয়ে বাহাদুরপুর কালুর মোড় এলাকা থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। গত রোববার গৃহবধূর (১৩ মার্চ) মামলা গ্রহণ করে ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসকরা ধর্ষণ সংক্রান্ত কোনো বিষয় জানাতে অপরাগতা প্রকাশ করেছেন। পরীক্ষার চূড়ান্ত রিপোর্টের অপেক্ষায় আছি। গৃহবধূকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।