বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় ৪২ দিন বয়সী নিজ কন্যাসন্তানকে গলাটিপে হত্যা করেছেন এক মা। সিমা বেগম (২৬) নামের ওই নারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি পুলিশের কাছে সন্তান হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
নিহত শিশুটির নাম রুকাইয়া। সন্তানকে হত্যার কারণ হিসেবে সিমা বেগম বলেছেন, শিশু রুকাইয়া বেশি কান্না করতো। পুলিশ জানিয়েছে, মেয়ের গায়ের রং কালো হওয়ায় অসন্তুষ্ট ছিলেন সিমা বেগম। এজন্য শিশুটিকে আদরও করতেন না।
মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তাকে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ।
সিমা বেগম বরিশালের গৌরনদী উপজেলার কমলাপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী। দেলোয়ার হোসেন ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। চাকরির সুবাদে তিনি ঢাকায় থাকেন। তিন বছরের এক ছেলে ও শিশু রুকাইয়াকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি থাকতেন সিমা বেগম।
পুলিশ জানায়, সিমা বেগম তার শিশুকন্যা রুকাইয়াকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী উমেদআলী গ্রামের বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সিমার বাবা মৃত আব্দুল হালিম আকনের ঘর থেকে রুকাইয়া নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর বাড়ির পুকুর থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পরে এ ঘটনায় নিহত শিশুর বাবা দেলোয়ার হোসেন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন।
৪২ দিন বয়সী শিশু রুকাইয়াকে হত্যার কারণ ও রহস্য উদ্ঘাটন তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ঘটনার পর সিমা বেগমের স্বজন, বাবার বাড়ির লোকজন ও তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলেন পুলিশ সদস্যরা। সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বরিশাল জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মো. ইকবাল হোছাইন ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিমা বেগমকে থানায় নিয়ে আসা হয়। সেখানে পুলিশের জেরার মুখে সন্তানকে গলাটিপে হত্যা করে মরদেহ পুকুরে ফেলে দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন সিমা।