মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় কুপ্রস্তাব না মানায় ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক গৃহবধূ। এ ঘটনায় দুজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী। মেহেরপুর অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতে মামলাটি করেন ওই গৃহবধূ। আসামিরা হলেন- মুদি ব্যবসায়ী সাজাহান আলী ও তার সহযোগী কামরুল ইসলাম। মামলাটি আবার টাকার বিনিময়ে আপোষ করেছেন ভুক্তভোগীর বাবা। মামলা প্রত্যাহারে আদালতে আবেদনও করেছেন তিনি।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে- মুদি ব্যবসায়ী সাজাহান আলী ও তার সহযোগী কামরুল ইসলাম তেঁতুলবাড়িয়া ইউনিয়নের রামদেবপুর গ্রামের বাসিন্দা। সাজাহানের দোকানের কাছে হওয়ায় গৃহবধূ তার দোকান থেকে মালামাল কিনতেন। এ সময়ের মধ্যে তাকে কুপ্রস্তাব দেন সাজাহান।
মামলার এজাহারের উদ্ধৃতি দিয়ে গৃহবধূর দায়ের করা মামলার আইনজীবী মো. মোশাররফ হোসেন জানান, গত ২৩ সেপ্টেম্বর ঘটনার রাতে তার মক্কেলের স্বামী বাড়ি ছিলেন না। এ সুযোগে আনুমানিক রাত ১০টার দিকে সাজাহান আলী ও কামরুল ইসলাম তাদের বাড়িতে ঢুকে ভুক্তভোগীর মুখ বেঁধে ঘরের বাইরে নিয়ে আসেন। বাড়ির পাশে একটি হলুদ ক্ষেতে তাকে নিয়ে ধর্ষণ করে ফেলে রেখে যায়। সেখান থেকে বাড়ি ফিরে আসেন তার মক্কেল। লোকলজ্জা ও সংসার ভাঙার ভয়ে নিজের স্বামীকে কিছু বলতে পারেননি ভুক্তভোগী।
আইনজীবী আরও জানান, গত ২৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে তার মক্কেলের স্বামী বাড়ি ফেরেন। স্ত্রীর চোখে ও মুখে আঘাতের চিহ্ন দেখে তিনি এর কারণ জিজ্ঞেস করেন। ভুক্তভোগী ঘটনা খুলে বলার পর তাকে গাংনী হাসপাতালে ভর্তি করেন স্বামী। এরপর গত বৃহস্পতিবার তার মক্কেল মেহেরপুর অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতে বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তপূর্বক নথিভুক্ত করতে গাংনী থানাকে নির্দেশ দেন আদালত।
এদিকে মামলা টাকার বিনিময়ে মামলা আপোষ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন নির্যাতিতার স্বামী। তিনি জানান, স্থানীয় কুচক্রী মহল ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ তার স্ত্রী ও শ্বশুরকে চাপ প্রয়োগ করে। ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে মামলাটি আপোষ করা হয়েছে।
বিষয়টি স্বীকার করে ভুক্তভোগীর বাবা বলেন, আমরা অর্থিকভাবে দূর্বল। মামলা চালানোর পরিস্থিতি নেই। এ কারণে গতকাল রোববার মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করেছি।
মামলা হলেও গ্রেপ্তার হননি মুদি ব্যবসায়ী সাজাহান আলী ও তার সহযোগী কামরুল ইসলাম। বিষয়টি জানতে সাজাহানের মোবাইলে কল দেওয়া হলে সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওবাইদুর রহমান বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনা পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে মামলাটি আপোশের কোনো সুযোগ নেই।’
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন