বগুড়ার গাবতলী উপজেলার ছয়ঘড়িয়া গ্রামের লিটন মিয়ার পুত্র ফাহারুল ইসলাম বিজয় (১৮)। সে উপজেলার সোনারায় স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। সংসারে অভাব অনাটন মুচতে লেখাপড়ার পাশাপাশি সংগ্রামী জীবন হিসেবে বেছে নেয় অটোভ্যান চালানোর পেশা। পরিবারে স্বপ্ন দেখাতো বিজয়। লেখাপড়া করে একদিন বড় হয়ে কষ্টের ঘানির অবসান ঘটাবে। সামনে রমজান মাস সংসারে ভালমন্দ খাবার আনতে হবে। এই ভেবে পরিবারের প্রধান উপার্জনক্ষম বিজয় ৩০ মার্চ বুধবার সকাল ৭টার দিকে বাড়ি থেকে অটোভ্যান নিয়ে বেরিয়ে পড়ে রোজগারের সন্ধানে।
সারাদিন কেটে গেলেও বিজয় আর বাড়ি ফেরেনি। তার পরিবারের সদস্যরা সম্ভাব্য স্থানে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার কোন সন্ধান পায় না। পরে রাতেই বিষয়টি গাবতলী থানায় জানানো হয়।
বাড়ি থেকে বিভিন্ন জায়গায় ফোন করেও বিজয়ের খোঁজ মেলেনি। তার পরিবারে দুঃচিন্তায় রাত কাটে। অবশেষে সংবাদ আসে বিজয়ের। তবে এই সংবাদ খুশির নয়। বরাবরই দুঃসংবাদ। গতকাল বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) সকাল ৮টার দিকে কাহালু উপজেলার নারহট্ট ইউনিয়নের ভ্যাপড়া এলাকার ফসলি জমির পাশের একটি খাল থেকে তার মরদেহ পাওয়া যায়৷ ঘাতকেরা তাকে হত্যা করে লাশ খালে ফেলে অটোভ্যান নিয়ে চলে যায়।
বেলা ১২টার দিকে কাহালু থানা পুলিশ বিজয়ের মরদেহ উদ্ধার করে। পরিবারের উপার্জনক্ষম একজন মেধাবী ছাত্র বিজয় পড়াশোনার পাশাপাশি অটোভ্যান চালিয়ে পরিবারকে সহযোগিতা করতেন।
কাহালু থানার ওসি আমবার হোসেন জানান, নিহতের পাঁজরে ও কোমরের নিচে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। ঘাতকদের শনাক্ত ও আটক এবং অটোভ্যান উদ্ধার করতে চেষ্টা চলছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে অটোভ্যান ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যেই তাকে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে। এভাবেই একটি স্বপ্নের মৃত্যু হলো। মাঝে মাঝেই এমন অটোভ্যান ছিনতাই সেই সাথে খুনের ঘটনা ঘটেই চলছে। অটোরিকশা বা ভ্যান চালকেরা সবাই দরিদ্র। সামান্য এই পুঁজির ওপর হামলা নিছক ঘাতকদের আটক করে কঠোর শাস্তির দাবি বিজয়ের পরিবারের।