টাঙ্গাইলের বাসাইলে ছয়মাস বয়সী সন্তানকে ফেলে নগদ ৮ লাখ টাকা ও ৪ লাখ টাকা মূল্যের স্বর্ণালংকার নিয়ে স্থানীয় এক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালকের সঙ্গে পালিয়েছেন প্রবাসীর স্ত্রী।
এ ঘটনায় ১৮ আগস্ট অটোচালক আতিক মিয়াসহ চারজনের নামে টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমানের আমলি আদালতে মামলা করেছেন শিশু সাইমনের বড় চাচা আনোয়ার হোসেন।
আতিক উপজেলার কাশিল ইউপি’র কাশিল উত্তর পাড়ার আজম মিয়ার ছেলে এবং প্রবাসীর স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার (২১) একই গ্রামের দক্ষিণপাড়ার শফি মিয়ার মেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে উপজেলার হাবলা ইউনিয়নের জিবনশ্বর উত্তর পাড়ার ঠান্ডু মিয়ার দ্বিতীয় ছেলে সিঙ্গাপুর প্রবাসী সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে সুমাইয়া আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়েতে সাদ্দাম তার স্ত্রীকে প্রায় সাতভরি স্বর্ণালংকার উপহার দেন। বিয়ের এক বছরের মাথায় তিনি আবার সিঙ্গাপুর চলে যান। ২০২১ সালের জানুয়ারির শেষের দিকে সাদ্দাম ও সুমাইয়া দম্পতির ঘরে একটি পুত্র সন্তান জন্ম হয়।
এদিকে, পূর্ব পরিচিত আতিকের অটোরিকশায় চলাচলের সুবাদে সুমাইয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। প্রায়ই তিনি সুমাইয়ার বাড়িতে যাতায়াত শুরু করেন। সাইমনের জন্মের পর সাদ্দাম তার এলাকায় জমি ক্রয়ের জন্য বেশকিছু টাকা বাড়িতে তার স্ত্রী সুমাইয়ার কাছে রাখেন। বিষয়টি জানতে পারে অটোচালক আতিক। তিনি সুমাইয়াকে বিয়ের প্রলোভন দেখায়। ১৮ জুলাই আতিকের সঙ্গে শিশু সাইমনকে রেখে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যান সুমাইয়া।
এর কয়েকদিন পর সুমাইয়ার পরিবার তাকে উদ্ধার করে এবং গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে টাকা ও স্বর্ণালংকার ফিরিয়ে দেওয়ার শর্তে সাদ্দামের পরিবার সুমাইয়াকে গ্রহণ করে। এরপর টাকা ও স্বর্ণালংকার ফেরত চাইলে ১৩ আগস্ট আবারও তিনি আতিকের সঙ্গে পালিয়ে যান।
রোববার (২২ আগস্ট) বিকেলে মামলার বাদী আনোয়ার বলেন, আমার ৬ মাস বয়সী ভাতিজাকে ফেলে চলে যাওয়ার পরও আমরা শুধুমাত্র এই দুধের শিশুর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে দ্বিতীয়বার সুমাইয়াকে মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু তার পরও সে আবার চলে গেলো। সে তার গর্ভের সন্তানের কথাও ভাবলো না। তাই আমরা আইনগত ভাবেই বিবাদীদের মোকাবিলা করবো।
সুমাইয়ার মা হেনা বেগম বলেন, এখন আমি আর সুমাইয়াকে আমার মেয়ে বলতে চাই না। আমাদের কথা না হোক, ওই দুধের শিশু বাচ্চাটার কথা ভেবেও তো সে ফিরে আসতে পারতো। এখন আমি এবং আমাদের পরিবারের সবাই সুমাইয়া, আতিক এবং যারা এদের সঙ্গে জড়িত সবার বিচার ও শাস্তি চাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রোববার সন্ধ্যায় বাসাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ জানান, আদালতের নির্দেশ মতে মামলা হয়েছে এবং এটি তদন্তাধীন রয়েছে। আসামিরা পলাতক। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।