English

16 C
Dhaka
শনিবার, জানুয়ারি ১৮, ২০২৫
- Advertisement -

২০ বছরের তরুণীকে বিয়ে করে সর্বস্বান্ত জল্লাদ শাহজাহান!

- Advertisements -

বঙ্গবন্ধুর খুনি, যুদ্ধাপরাধী, জামায়াতের শীর্ষ নেতা ও জেএমবিসহ আলোচিত মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ৬০ জনের ফাঁসির রায় কার্যকর করা ‘জল্লাদ’ শাহজাহান ভূঁইয়া ভালো নেই। ৪০ বছর পর গত ৯ মাস আগে জেল থেকে মুক্তি পেয়ে নতুন করে এখন আবার আদালতে দৌঁড়াতে হচ্ছে তাকে।

জানা গেছে, কারামুক্ত হয়ে ২০ বছরের তরুণীকে বিয়ে করেছিলেন ‘জল্লাদ’ শাহজাহান। কিন্তু স্ত্রী ও তার স্বজনদের যোগসাজশে বিয়ের নামে প্রতারণার ফাঁদে ফেলা হয় তাকে। বিয়ের দেড় মাস পর তার কাছ থেকে দশ লাখ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়ে যায় স্ত্রী। এ ঘটনার কয়েক দিন পর আদালতে গিয়ে স্ত্রী সাথী উল্টো শাহজাহানের নামে যৌতুকের মামলা করেন। এমনটাই অভিযোগ শাহজাহান ভূঁইয়ার।

এবার প্রতারণার অভিযোগে স্ত্রী সাথী আক্তার ফাতেমা ও শাশুড়ি শাহিনূর বেগমসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন শাহজাহান ভূঁইয়া। অপর আসামিরা হলেন- শাহজাহানের শশুড় বাড়ির স্বজন দীন ইসলাম, আজিদা বেগম,রাসেল ও বাবলু।

আজ রবিবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্র এ. কে. এম. রকিবুল হাসানের আদালতে মামলাটি করেন তিনি।

আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)কে অভিযোগ সংক্রান্তে তদন্ত করে আগামী ২৭ জুনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলা দায়ের শেষে আদালত থেকে বেরিয়ে জল্লাদ শাহজাহান বলেন, ‘আমি আইনজীবীর পরামর্শে আমার স্ত্রীসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আমি ন্যায় বিচার চাই। আদালতে আমি ন্যায় বিচার পাবো বলে আশা করি।’

বাদী জল্লাদ শাহজাহানের আইনজীবী মো. ওসমান গনি মামলা পরিচালনা করেন।

কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে চায়ের দোকান দিয়েছিলেন শাহজাহান। ২০২৩ সালের ২১ ডিসেম্বর কাজী অফিসে সাথী আক্তার ফাতেমার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন শাহজাহান। কিন্তু বিয়ের দেড় মাস পরই স্ত্রীর আসল রূপ ধরা পড়ে তার কাছে।

প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পাওয়া নগদ উপহার ও অন্যান্য খাত থেকে পাওয়া প্রায় ১০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায় তার স্ত্রী ও শাশুড়ি।

শুধু নগদ অর্থ নিয়ে পালিয়ে গিয়েই ক্ষান্ত হয়নি তার স্ত্রী। উল্টো তার বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলাও করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

সব হারিয়ে দেনায় জর্জরিত হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন দেশের আলোচিত এই জল্লাদ।

সম্প্রতি গণমাধ্যমকে আক্ষেপের সঙ্গে জল্লাদ শাহজাহান বলেন, ‘পাওনাদারদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। কখন কোথায় থাকি ঠিক নাই। অনেকদিন ধরে অসুস্থ, আমাকে দেখার কেউ নেই।’

তিনি বলেন, ‘আমি এই দেশে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় কারাভোগ করেছি; এখন আমার করার কিছুই নেই। কারাগারে অন্তত আমাকে খাওয়া-দাওয়ার খরচ নিয়ে চিন্তা করতে হতো না।’

উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সালে ডাকাতি ও হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে জেলে যান শাহজাহান। ২০০১ সালের আগে ১৯৮৮ সাল থেকে সহকারী জল্লাদ হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। তখন তার বয়স ৩০ এর কিছু বেশি। বয়স যখন বিশের কোঠায়, তখন থেকেই ঘর ছাড়েন। মা-বাবা ছাড়াও শাহজাহানের তিনটি বোন ছিল। জেলে ঢোকার পর শুধু বড় বোনই শাহজাহানের সঙ্গে কয়েকবার দেখা করতে এসেছিলেন।

সাজা শুরুর প্রায় পাঁচ বছর পর শাহজাহানের বাবা মারা যান, ১০ বছর পর গত হন মা। তিনি কারও জানাজাতেই উপস্থিত থাকতে পারেননি। শাহজাহানের বোনের বয়স এখন ৯০ এর ঊর্ধ্বে; তার রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়দের মধ্যে তিনিই একমাত্র বেঁচে আছেন।

বর্তমানে জল্লাদ শাহজাহানের হার্টের সমস্যা, রক্তচাপ ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা রয়েছে। ৪৪ বছর কারাভোগের পর ২০২৩ সালের ১৮ জুন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান শাহজাহান ভূঁইয়া।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন