২০১৪ সালে চলচ্চিত্রে পদার্পনের পর থেকেই জীবনযাত্রা পাল্টে যেতে থাকে পিরোজপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা শামসুর নাহার স্মৃতি ওরফে স্মৃতিমণি ওরফে পরীমনির। ২০১৬ সাল থেকে নিয়মতি অ্যালকোহল সেবনে আসক্ত হয়ে পড়েন তিনি।
পরীমনিকে প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজ নিয়মতি মদসহ বিভিন্ন মাদক সরবরাহ করতেন। আর রাজের নেতৃত্বে শুধু পরীমনির বাসাতেই নয়, রাজধানীর বিভিন্ন অভিযাত এলাকায় পার্টির আয়োজন হতো। এসব পার্টিতে বিত্তবানদের ডেকে নিয়ে ব্ল্যাকমেলিংয়ের মাধ্যমে চলতো তাদের অর্থ উপার্জন।
বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) বিকেলে র্যাব সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, তার নাম শামসুর নাহার স্মৃতি ওরফে স্মৃতিমনি ওরফে পরীমনি।
তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে, তিনি ২০১৪ সালে সিনেমা জগতে আসেন। এ পর্যন্ত ৩০টি সিনেমা ও ৫/৭ টি টিভিসিতে অভিনয় করেছেন। তাকে পিরোজপুর থেকে ঢাকার সিনেমা জগতে আনেন আটক হওয়া প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজ।
জিজ্ঞাসাবাদে পরীমনি জানান, ২০১৬ থেকে তিনি নিয়মিত অ্যালকোহল সেবন করেন। মাত্রাতিরিক্ত চাহিদা মেটাতে তিনি বাসায় একটি মিনিবার করেছেন। মিনিবার থাকায় তার বাসায় পার্টির আয়োজন করা হতো। সেই পার্টিতে বিভিন্ন প্রকার মাদক সরবরাহ করতেন রাজ।
বুধবার (৪ আগস্ট) রাত সোয়া আটটার দিকে বনানীর বাসা থেকে পরীমনিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়।
অভিযানের প্রথম দিকে পরীমনি র্যাবকে কোনো সহযোগিতা করেননি। তবে পরে তার ঘর তল্লাশি করে ফ্ল্যাটের কেবিনেট থেকে বিদেশি মদ, লাইসার্জিক অ্যাসিড ডাইইথ্যালামাইড (এলএসডি) এবং আইস উদ্ধার করা হয়।
পরে তার ড্রয়িং রুমের কাভার্ড, শো-কেস, ডাইনিং রুম, বেডরুমের সাইড টেবিল এবং বাথরুম থেকে বিপুল সংখ্যক মদের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে।
অভিযানে অংশ নেওয়া র্যাব কর্মকর্তারা জানান, পরীমনির ড্রয়িং রুম, ডাইনিং রুম, বেডরুম এমনকি বাথরুম থেকেও বিদেশি মদ উদ্ধার করা কয়েছে। সারা বাসাজুড়ে থরে থরে মদের বোতল রাখা ছিলো।
তার বাসার এমন কোনো জায়গা নেই, যেখানে মদ নেই। তার কাছে দেশি-বিদেশি নামিদামি ব্র্যান্ডের মদ ছিল, যা বাংলাদেশে খুব কমই আমদানি হয়।