রাজশাহীতে সড়কে মোটরবাইক আটকানোর প্রতিবাদে আশিক আলী (২৫) নামে এক যুবক তার নিজের বাইকে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে রাজশাহী মহানগরীর কোর্ট অকট্রয় মোড় এলাকায় ওই যুবক এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আশিক আলী পেশায় একজন বালু ব্যবসায়ী। তিনি ভারতীয় ব্রান্ডের টিভিএস অ্যাপাচি আরটিআর-১৬০ সিসির একটি বাইক ব্যবহার করতেন। ছয় মাস আগে টিভিএসের রাজশাহীর পরিবেশকের কাছ থেকে তিনি নতুন বাইকটি কেনেন। আগুন লাগানোর আগে আশিকসহ তিনজন বাইকে চড়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় আশিকের মাথায় হেলমেট ছিল না।
কোর্ট অকট্রয় মোড়ে এ সময় রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট আবদুল কাইয়ুম দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি বাইকটি থামিয়ে কাগজপত্র চান। এছাড়া তিনজন নিয়ে বাইক কেন চালাচ্ছেন এবং হেলমেট নেই কেন- জানতে চান সার্জেন্ট কাইয়ুম।
বিষয়টি নিয়ে এ সময় আশিক সার্জেন্ট কাইয়ুমের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন আশিক। এর একপর্যায়ে তিনি বাইকে আগুন জ্বালিয়ে দেন। পরে স্থানীয়রা পানি দিয়ে আগুন নেভান। তবে আগুনে বাইকটি পুড়ে গেছে।
এ সময় খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন আশিকের বাবা আসাদ আলী। এরপর আশিক ও তার বাবাকে পুলিশের গাড়িতে তুলে ট্রাফিক অফিসে নেওয়া হয়।
আশিক আলী বলেন, ছয় মাস আগে তিনি নতুন বাইকটি কিনেছেন। এখনো নিবন্ধন হয়নি। এই ছয় মাসে ট্রাফিক পুলিশ তাকে পাঁচ-ছয়টি মামলা দিয়েছে। তিনি প্রায় ৪০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়েছেন। সার্জেন্ট কাগজ চাইলে তিনি বাড়ি থেকে এনে দেখাতে চান কিন্তু সার্জেন্ট তাকে সময় দিতে চাননি। তাই তিনি বাইকে আগুন দিয়েছেন।
ঘটনাস্থলে কর্তব্যরত সার্জেন্ট আবদুল কাইয়ুম বলেন, সড়ক আইন লঙ্ঘন করে আশিক আলী বাইকে তিনিসহ আরও দুজনকে তুলেছিলেন। কারও মাথায় হেলমেট ছিল না। সে জন্য থামানো হয়। এ সময় কাগজপত্র চাইলে তিনি সেটিও দিতে পারেননি। তাই গাড়িটি জব্দ করে ট্রাফিক অফিসে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছিল। তখনই রেগে গিয়ে তিনি বাইকটির তেলের ট্যাংকির সংযোগ খুলে আগুন ধরিয়ে দেন।
আরএমপির মুখপাত্র রফিকুল আলম বলেন, ট্রাফিক নিয়ম না মানার কারণে মামলা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল। এ কারণে বাইকটিও জব্দ করা হচ্ছিল। তখনই আশিক বাইকটিতে আগুন দিয়েছেন। ঘটনার কিছুক্ষণ পর সেখানে আশিকের বাবা উপস্থিত হন। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, তার ছেলের মাথা গরম। যখন তখন যা তা করেন। কিছুটা মানসিক সমস্যাও রয়েছে।
আশিক আলী ও তার বাবা আসাদ আলীকে ট্রাফিক অফিসে কেন নিয়ে যাওয়া হয়েছে- জানতে চাইলে রফিকুল আলম বলেন, এটা আমি জানি না। ঘটনা সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানার জন্য তাদের নিয়ে যেতে পারেন। তাদের সঙ্গে হয়তো কথা বলার জন্যই ট্রাফিক অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।