যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে সদ্যজাত সন্তানকে ফেলে রেখে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে গেছেন এক গৃহবধূ। হাসপাতালে প্রসব হওয়ার ঘণ্টা খানিকের মধ্যেই ওই গৃহবধূ সদ্যজাত সন্তানকে ফেলে রেখে ইব্রাহিম নামে এক যুবকের সঙ্গে পালিয়ে যান। মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে ঘটনাটি ঘটলেও বৃহস্পতিবার (০৭ অক্টোবর) পরিবার থানায় যোগাযোগ করলে বিষয়টি জানাজানি হয়।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ৪ অক্টোবর রাত ১২টা ৫১ মিনিটে যশোর শহরের স্টেডিয়াম পাড়ার শাহিনুর হোসেনের স্ত্রী নিঝুম (২০) তার প্রেমিক ইব্রাহিমকে নিয়ে সন্তান জন্ম দিতে হাসপাতালে ভর্তি হন। পরের দিন মঙ্গলবার দুপুরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। এরপর ঘণ্টা পার না হতেই সদ্যজাত সন্তানকে হাসপাতালে রেখে নিঝুম নিখোঁজ হন। ভর্তি তথ্যে শিশুটির বাবার নাম শাহিনুর লিখলেও প্রেমিক ইব্রাহিমকে তার স্বামী হিসেবে পরিচয় দেন। একই সঙ্গে তাদের বাসা নিঝুমের স্বামী শাহিনুরের যশোরের স্টেডিয়াম পাড়া উল্লেখ করা রয়েছে। জরুরি যোগাযোগের জন্য দেওয়া ফোন নম্বরে কল দেওয়া হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। শিশুটি দুই দিন হাসপাতালের সেবিকাদের তত্ত্বাবধানে ছিল।
এদিকে, স্বজনেরা পরিবারের সম্মানহানি হওয়ার ভয়ে থানায় যোগাযোগ না করে নিঝুমকে আত্মীয় স্বজনের মাধ্যমে সন্ধান করতে থাকেন। একপর্যায়ে তাকে না পেয়ে পুলিশের সহযোগিতায় শিশুটির নানা-নানির সন্ধান পাওয়া যায়। পরবর্তীকালে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ শিশুটিকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেন।
বিষয়টি নিয়ে শিশুটি বাবা শাহিনুরের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তবে শিশুটির নানা শাহ আলম জানান, ২০২০ সালের ৩ মার্চ নিঝুম ও শাহিনুরের বিয়ে হয়। বিয়ের পরে নিঝুম স্বামী শাহিনের সঙ্গে ঢাকায় থাকতেন। কিছুদিন আগে নিঝুম সন্তান প্রসব করতে মাগুরায় তার বাবার বাড়ি আসেন। কিন্তু নিঝুমের সঙ্গে কীভাবে যেন পরিচয় হয় ভোলা জেলা সদরের খয়েরতলা এলাকার ইব্রাহিম নামে এক যুবকের। ওই ইব্রাহিম ফুসলিয়ে নিঝুমকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। নিঝুমের সন্তান জন্ম হওয়ার পর ইব্রাহিম তাকে নিয়ে পালিয়ে যায়।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. আরিফ আহম্মেদ বলেন, শিশুটিকে পুলিশের মধ্যস্থতায় তার নানা শাহ আলম, নানি আসমা খাতুন এবং বাবা শাহিনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে শিশুটি ভালো রয়েছে।
যশোর কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, ইব্রাহিম আর নিঝুমকে আমরা খুঁজছি। বর্তমানে শিশুটি তার বাবার বাড়িতে রয়েছে। শিশুটি বর্তমানে ভালো আছে বলে জানতে পেরেছি।