ফেনী সুফি সদর উদ্দিন রোড এলাকার চৌধুরী সুলতানা ম্যানশনে দুবাই প্রবাসী মো. সোহেল (৩৫) কে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত স্ত্রী শিউলী আক্তারকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৭ একটি দল। আজ শনিবার (২১ আগস্ট) রাতে চৌদ্দগ্রামের জগন্নাথ ইউনিয়নের নানকরা বাজারের ইসলামিয়া মাদরাসার পেছনে ছুট্ট মিয়ার বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে ফেনীস্থ র্যাব-৭ এর একটি দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
অন্যদিকে শনিবার বাদ মাগরিব জানাজা শেষে সোহেলকে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুনবতী ইউনিয়নের খাটরা গ্রামের আন্দি পুকুর পাড়ে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
এর আগে গত শুক্রবার (২০ আগস্ট) সকালে শহরের নাজির রোড এলাকার চৌধুরী সুলতানা ম্যানশনের ৬ষ্ঠ তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত সোহেলের মা নিরালা বেগম বাদী হয়ে শিউলি আক্তারকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন।
স্থানীয়দের ধারণা, পারিবারিক কলহের জেরে স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা করে দুই সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে যায় স্ত্রী শিউলি।
ওই ফ্ল্যাটের বাসিন্দা ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দুবাই প্রবাসী মো. সোহেলের সৎ মাকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্ত্রী শিউলি আক্তারের সঙ্গে পারিবারিক কলহ চলে আসছিল। গত কোরবানি ঈদে প্রবাসী সোহেল দেশে ফিরলে সৎ মায়ের ভরণপোষণ নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে শুক্রবার রাত ২টার দিকে তাদের মধ্যে ফের বাকবিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তি হলে স্ত্রী শিউলি আক্তার বটি দা দিয়ে স্বামী সোহেলকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা ৯৯৯-এ ফোন দিলে পুলিশ সকালে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায়।
নিহত সোহেল স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ সৎ মাকে নিয়ে ওই ভবনটিতে ভাড়া থাকতেন। তিনি কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুনবতী ইউনিয়নের খাটুরিয়া গ্রামের আবুল কালামের ছেলে।
সোহেলের জেঠাতো ভাই ফাহাদের অভিযোগ, রাতেই সোহেলকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান তার স্ত্রী। যাওয়ার সময় তার (স্ত্রী) বাবা মারা গেছেন বলে বাসার দারোয়ানকে জানান।
সোহেলের মা নিরালা বেগম জানান, তার ছেলে ও ছেলের বউয়ের মাঝে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকত। সোহেল দুবাইতে বিয়ে করেছে এমন অভিযোগ এনে স্ত্রী শিউলী প্রায়ই ঝামেলা করত। ঘটনার দিনও এ বিষয়ে তাদের মধ্যে রাগারাগি হয় বলে জানান তিনি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ১০ বছর আগে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুনবতী ইউনিয়নের খাটরা গ্রামের আবুল কালামের ছেলে সোহেলের সঙ্গে একই উপজেলার শিউলীর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। গত এক মাস আগে দুবাই থেকে তিন মাসের ছুটিতে দেশে আসে সোহেল।