English

26 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৪
- Advertisement -

সিলেটে আবর্জনা থেকে বিস্কুট সংগ্রহ করে বিক্রি হচ্ছে বাজারে!

- Advertisements -

প্রত্যেক সিটি কর্পোরেশনের নির্দিষ্ট একটি আবর্জনা ফেলার ডাম্পিং গ্রাউন্ড থাকে। সিলেট সিটি করপোরেশনের ২৭ টি ওয়ার্ডের আবর্জনা ফেলার জন্য নির্ধারিত ডাম্পিং গ্রাউন্ড হচ্ছে নগরীর দক্ষিণ সুরমার লালমাটিয়া পারাইচকে। প্রতিদিন অন্যান্য পঁচা-বাসি খাবারের সাথে বিভিন্ন ফ্যাক্টরির মেয়াদ উত্তীর্ণ বিস্কুট সেখানে ফেলা হয়।

কিন্তু সেই আবর্জনায় ফেলে দেওয়ায় বিভিন্ন ফ্যাক্টরির নোংরা ও মেয়াদোত্তীর্ণ বিস্কুট প্যাকেট জাত করে আবার বাজারে বিক্রির খবর মিললে চমকে যাওয়ার মতো মনে হলেও এটি ঘটছে সিলেটে।

যারা বিক্রি করছেন তারাও ঘটনাটি স্বীকার করছেন। তারা বলছেন সিটি কর্পোরেশন থেকে অনুমতি নিয়ে তারা বিস্কুট গুলো নিচ্ছেন। আর সিটি কর্পোরেশন বলছে লিজ নেয়ার সময় বিস্কুট গুলো মাছকে খাওয়ানোর কথা বলা হয়েছে।

দক্ষিণ সুরমা লালমাটিয়া পারাইচক ডাম্পিং গ্রাউন্ডে প্রতিদিনই সিলেট সিটি করপোরেশনের ২৭ টি ওয়ার্ডের সকল ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয়। সেই কাজের সাথে জড়িত রয়েছেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রায় ৫ শতাধিক পরিচ্ছন্ন কর্মী। পচা-দুর্গন্ধময় সেই স্তূপে প্রতিদিন ময়লা-আবর্জনার সাথে শহরের খাদিমনগর,গুটাটিকর এলাকায় গড়ে ওঠা বিভিন্ন অভিজাত বিস্কুট ফ্যাক্টরির মেয়াদোত্তীর্ণ নষ্ট হয়ে যাওয়া বিস্কুট সেখানে ফেলা হচ্ছে। সেই বিস্কুটগুলো ওইখান থেকে সংগ্রহ করে বাজারে এনে দীর্ঘদিন ধরে বিক্রি করছে একটি চক্র। এ ঘটনায় গুটাটিকর ও পারাইচক এলাকার বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে গত ১০ অক্টোবর সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বরাবর একটি অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। অভিযোগপত্রে তারা উল্লেখ করেন এগুলো বর্জ্য। এখানে যে আবর্জনাগুলো ফেলা হয় তা মানুষ ও পরিবেশের যাতে কোনো ক্ষতি না করে এজন্য এগুলো পুড়ানো হয়।কিন্তু বিস্কুট গুলো পুড়নো হয়না। একটি চক্র সেগুলো ব্যাগে ভর্তি করে নিয়ে বাজারে বিক্রি করছে।

স্থানীয়রা বলছেন, ডাম্পিং এর আবর্জনায় যা কিছু ফেলা হয় সেগুলো মানুষ কেন কোন মাছের জন্য নিরাপদ নয়। ময়লা-আবর্জনায় পচা খাবার সিসিক কিভাবে লিজ প্রধান করে তাও আমাদের বোধগম্য নয়।

এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন এই বিস্কুটগুলো আবর্জনা ফেলার ফলে ফাঙ্গাস তৈরি হয়ে যায়। আর এই খাবারগুলো মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। কোন মানুষ নিয়মিত খেলে তার কিডনি ও লিভারের সমস্যা হতে পারে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নগরীর দক্ষিণ সুরমার ছীটা গোটাটিকর এলাকার নরেন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে কানু বিশ্বাস ও তার সহযোগী নিশি বিশ্বাস ও বর্তমানে জৈন পুরের বাসিন্দা হবিগঞ্জের মৃত হাতিম মোল্লার ছেলে মিলন মিয়া লালমাটির ডাম্পিং গ্রাউন্ড থেকে পরিত্যক্ত খাবার জাতীয় জিনিস বিস্কুট-ব্রেড ও পঁচা-বাসি খাদ্যদ্রব্য প্রক্রিয়া জাতের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকার খাদ্য সামগ্রী তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে যাচ্ছেন। এসব পণ্যের লেবেল লাগিয়ে সিলেট নগরীর কালীঘাটের কিবরিয়া স্টোরের স্বত্বাধিকারী মোঃ কিবরিয়ার কাছে বিক্রি করছেন। আর কিবরিয়া সেগুলো গরিব ও নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে বিক্রি করছেন বলে স্হানীয়রা অভিযোগ করছেন।

এ ব্যাপারে কিবরিয়া স্টোরে স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ কিবরিয়া সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান কয়েকটি বিস্কুট ফ্যাক্টরি বিস্কুট ও বিস্কুটেরগুঁড়া কানু বিশ্বাস আমার কাছে বিক্রি করেন। তিনি জানান যাদের মাছের খাবার আছে তারাই বিস্কুট গুলো আমার কাছ থেকে কিনে নেয়।মানুষ যদি নিজের খাবারের জন্য কিনে নেয় তাহলে আমার জানা নেই।

এদিকে কানু বিশ্বাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সিটি কর্পোরেশনের ফারুকও হানিফ নামক দুই জন কর্মকর্তার মাধ্যমে সিসিকের পান্ডে ৫০ হাজার টাকা জমা দিয়ে আমি লিজ নিয়েছি। প্রতিমাসে আরো ৫ হাজার টাকা করে দিচ্ছি। তিনি জানান এগুলো আমি মাছের খাবার হিসেবে কালীঘাটের কিবরিয়া স্টোর সহ আরো কয়েকটি দোকানে বিক্রি করি। তারা এগুলো খামারিদের কাছে বিক্রি করছেন না অন্য কারো কাছে বিক্রি করেন তা আমার জানা নেই।

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানান, আর কাউকে লিজ দেওয়া হবেনা। যাদের লিজ দেওয়া হয়েছিল সেই লিজ বাতিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন