কক্সবাজারের চকরিয়ায় ক্রয়কৃত জায়গা দখল করে নেওয়ার খবরে বাধা দিতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের নির্মম পিটুনিতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছেন পৌরসভা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সোহেল রানা (২৮)। এ ঘটনায় জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সন্ত্রাসী হামলায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সোহেল খুনের ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে পৌরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের ভরামুহুরীস্থ হাজিপাড়ায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। নিহত সোহেল রানা পৌরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের পালাকাটা হাসেম মাস্টার পাড়ার আবদুর করিমের পুত্র।
প্রত্যক্ষর্দীরা জানান, হামলার পর ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা সোহেলকে দ্রুত উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সোহেলকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর পুলিশ প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
ঘটনার পর পরই হামলায় জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার নাম আবদুল মান্নান (৩৪)। তিনি হাজিপাড়ার কবির আহমদের ছেলে।
নিহত সোহেলের বাবা আবদুর রকিম জানান, ভরামুহুরী হাজি পাড়ায় তাদের ক্রয়কৃত একটি জায়গা রয়েছে। সেই জায়গা দখলে নেওয়ার চেষ্টা চালায় ভূমিদস্যু-সন্ত্রাসীরা। এই খবর পেয়ে তার ছেলেসহ আরো কয়েকজন সেখানে ছুটে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে একা পেয়ে হাজি পাড়ার নুরুল আলম ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা সোহেলকে পেছন থেকে হাতুড়ি, গাছের বাটাম দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে। এতে ঘটনাস্থলেই পড়ে থাকে সোহেলর নিথর দেহ। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আশরাফ হোসেন জানান, হামলার খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনায় আরো যারা জড়িত রয়েছে তাদেরকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে মামলা নেওয়া হবে।
ঘটনার বিষয়ে কক্সবাজারের চকরিয়া সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারি পুলিশ সুপার মো. তফিকুল আলম বলেন, ইতোমধ্যে পুলিশ অভিযান চালিয়ে হামলায় জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। জমির বিরোধ নিয়ে এই হামলার ঘটনায় আরো যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশ মাঠে রয়েছে। তবে ঘটনার পর থেকে হামলাকারীরা পলাতক রয়েছেন।
বিয়ের ২৪ দিনের মাথায় সন্ত্রাসী হামলায় স্বামী সোহেলকে হারালেন নববিবাহিতা কলি। সোহেল বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন গত ৪ নভেম্বর। পেকুয়া উপজেলা কৃষকলীগ নেতা মেহের আলীর কন্যা কলির সঙ্গে ২৪ দিন আগে মহাধুমধামে বিয়ে হয় দুজনের। সেই বিয়ের মেহেদীর রং না মুছতেই স্বামী সোহেলকে হারালেন কলি।
শনিবার দিবাগত রাতে মর্মান্তিক এই ঘটনার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সোহেলের নির্মম খুনের ঘটনাটি নিয়ে আলোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। অবিলম্বে সোহেলের খুনি সকলকে দ্রুতসময়ের মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবিতেও সোচ্চার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন