শেরপুরে এক কলেজছাত্রীকে বাসায় ডেকে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে কলেজশিক্ষক ও ভাড়া বাসার মালিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শেরপুর পৌর শহরের গৌরীপুর এলাকায় বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তারকৃত জুবায়ের হোসাইন (২৮) নকলা উপজেলার চৌধুরী ছবরুন্নেছা মহিলা ডিগ্রি কলেজের আইসিটি বিভাগের প্রভাষক ও লুৎফর রহমান (৩৫) শেরপুর শহরের গৌরীপুর এলাকার মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে। পলাতক রয়েছেন ঘটনায় জড়িত অ্যাডভোকেট আবু রাহাত (৩৫) নামে মামলার অপর এক আসামি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে শেরপুর জেলা হাসপাতালে ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এদিন গ্রেপ্তারকৃত দুজনকে পুলিশ আদালতে সোপর্দ করলে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আল মামুনের আদালতে গ্রেপ্তারকৃত প্রভাষক জুবায়ের হোসাইন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অপর আসামি লুৎফর রহমানের আগামী রবিবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, প্রভাষক জুবায়ের হোসাইনের বাড়ি শ্রীবরদী উপজেলার ভায়াডাংগা গ্রামে। তিনি পরিবার নিয়ে নকলায় একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। আবার প্রাইভেট পড়ানোর জন্য শেরপুর শহরের গৌরিপুর মহল্লায় লুৎফর রহমানের বাসার দুটি কক্ষ ভাড়া নেন। ওই কলেজের একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর মা কিডনি রোগী। তাকে নিয়ে মেয়েটির বাবা চিকিৎসার জন্য অনেকদিন ধরে ভারতে আছেন। এই সুযোগে তার সঙ্গে অনৈতিক সর্ম্পক গড়ে তোলেন শিক্ষক জুবায়ের। এক পর্যায়ে তারা বিভিন্ন নেশায় আসক্ত হন। বুধবার রাত ৯টার দিকে জুবায়ের শেরপুরের বাসায় মেয়েটিকে নিয়ে আসেন। তাদেরকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখে ফেলেন বাসার মালিক লুৎফর। বিষয়টি তিনি তার বন্ধু প্রতিবেশী অ্যাডভোকেট আবু রাহাতকে জানান।
পরে লুৎফর ও রাহাত এসে ওই ঘরে ঢুকে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন এবং রাতেই তিনজন মিলে মেয়েটিকে নকলায় পাঠিয়ে দেন। বাড়িতে গিয়ে মেয়েটি ৯৯৯-এ ফোন করে ঘটনাটি নকলা থানার পুলিশকে অবহিত করেন। পুলিশ বৃহস্পতিবার ভোরে অভিযান চালিয়ে শিক্ষক জুবায়ের হোসাইন ও লুৎফর রহমানকে আটক করে। কিন্তু পালিয়ে যান অ্যাডভোকেট আবু রাহাত।
শেরপুর সদর থানার উপপরিদর্শক বন্দে আলী মিয়া জানান, এ ঘটনায় ভিকটিম কলেজছাত্রী বাদী হয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর আসামিকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
চৌধুরী ছবরুনেছা মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল খালেক বলেন, ঘটনা জানার পর জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলে ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রশিদ বলেন, ওই শিক্ষককে বরখাস্ত ও তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।