সিলেটের কানাইঘাটে নিখোঁজ শিশু মুনতাহার লাশ উদ্ধারের পর স্থানীয়দের সহায়তায় সন্দেহভাজন প্রতিবেশী ৩ নারীকে আটক করেছে পুলিশ। ক্ষুব্ধ জনতা ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে ওই নারীদের ঘর।
কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আউয়াল বলেন, মুনতাহার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বাড়ির পাশের মর্জিয়া আক্তার ও তার মা আলিফজান মিলে তাকে হত্যা করেছে।
তিনি বলেন, মুনতাহাকে গত রোববার (৩ নভেম্বর) অপহরণ করার পর হত্যা করা হয়। ওইদিনই তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মরদেহ ঘরের পাশের একটি খালে কাঁদা মাটিতে চাপা দিয়ে রাখা হয়। আজ (রোববার) ভোরে আলিফজান বেগম লাশ সরানোর চেষ্টাকালে স্থানীয়রা দেখে ফেলেন। এসময় স্থানীয় থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। মর্জিয়া, তার মা ও নানীকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে আলিফজান ভিক্ষাবৃত্তি করতেন।
এদিকে ধরা পড়ার পর আলিফজান জানান, মুনতাহার লাশ কোলে করে পার্শ্ববর্তী পুকুরে ফেলার চেষ্টা করছিলেন। তিনি ঘটনা জানতেন কিন্তু কাউকে জানাননি।
লাশ পাওয়ার পর দেখে গেছে প্রায় এক সপ্তাহ লাশ কাদা মাটিতে চাপা থাকায় গেলে পঁচে মাথার খুলি বেরিয়ে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল ওয়াহিদ বলেন, ঘটনার দিন (৩ নভেম্বর) মুনতাহা আমার বাড়িতে খেলা করছিল। এই দিন শিশুটিকে ধরে নিয়ে হত্যার পর ঘরের লাশ পাশের খালে পুঁতে রাখা হয়। মর্জিয়া, তার মা আলিফজান ও আলিফজানের মা কুতুবজান এই ঘটনা করবে আমরা কল্পনাও করতে পারিনি।
ওসি বলেন, শনিবার (১০ নভেম্বর) দিনগত রাত ১২টার দিকে মর্জিয়াকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও কোনো তথ্য উদঘাটন করা যায়নি। বরং সহজভাবে হেসে হেসে উত্তর দেয়। এরপর মরদেহ উদ্ধারের পর তাকে আটক দেখানো হয়। মার্জিয়াকে থানায় নেওয়ার ফাঁকে আলিফজান লাশ খাল থেকে সরিয়ে নিয়ে পুকুরে ফেলে ঘটনা অন্যদিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছিলেন। এসময় লোকজন দেখে ফেলেন।
ওসি জানান লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
উল্লেখ্য, নিহত মুনতাহা (৬) কানাইঘাট উপজেলা সদর ইউনিয়নের বীরদল ভাড়ারীফৌদ গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে। সে নিখোঁজ হওয়ার খবরটি দেশে বিদেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে স্বজন ছাড়াও অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী মুনতাহার সন্ধান দিলে পুরস্কার ঘোষণা করেন।