ময়মনসিংহের ফুলপুরে সহকারী শিক্ষিকাকে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ায় প্রধান শিক্ষককে জুতাপেটা করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দেওয়ায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
গত শনিবার (১২ মার্চ) উপজেলার ভাইটকান্দি ইউনিয়নের সুতারকান্দি শহীদ স্মৃতি নিম্ন-মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মনিরুজ্জামান রুবেলকে জুতাপেটা করেন একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মুর্শিদা আক্তার বিউটি।
এ ঘটনায় ওইদিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার লিখিত অভিযোগ করেন সহকারী শিক্ষিকা মুর্শিদা আক্তার বিউটি।
পরের দিন রোববার প্রধান শিক্ষক মো. মনিরুজ্জামান রুবেল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, শিক্ষা কর্মকর্তা ও ফুলপুর থানায় তাকে অপমান ও অপদস্ত করার অভিযোগ করেন।
গতকাল সোমবার (১৪ মার্চ) তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শীতেষ চন্দ্র সরকার এবং তিন দিনের মাঝে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী দপ্তরি হাবিবুর রহমান বলেন, স্যার এবং ম্যাডাম অফিসে বসে থাকা অবস্থায় আমি বাইরে পানি আনতে যাই। পানি নিয়ে ফিরে এসে দেখি দুজনই তর্কাতর্কি করছেন। এ সময় ম্যাডাম স্যারের কাছে শিক্ষকদের হাজিরা খাতা চান। পরে স্যার অন্যান্য শিক্ষক এলে খাতা দেবেন বলেন। এরই মাঝে ম্যাডাম পায়ের জুতা খুলে স্যারকে পেটাতে শুরু করেন।
এ বিষয়ে মুর্শিদা আক্তার বিউটি বলেন, গত দুই তিন মাস আগে থেকেই প্রধান শিক্ষক আমার সঙ্গে আপত্তিকর কথা ও অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছেন। মাঝে একবার সবাইকে বিষয়টি জানিয়ে দেব বললে তিনি আর এমন প্রস্তাব দেননি। ঘটনার দিন আমরা স্কুলে পাঁচজন শিক্ষক-শিক্ষিকা ছিলাম। সবাইকে ক্লাস নেওয়ার জন্য শ্রেণিকক্ষে পাঠিয়ে দেওয়া হয় এবং আমাকে অফিস রুমে বসতে বলেন প্রধান শিক্ষক। কিছুক্ষণ পর অনৈতিক প্রস্তাব দিলে আমি তাকে অপমান করি।
তবে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক মো. মনিরুজ্জামান রুবেল বলেন, গত ৮ ও ৯ মার্চ দুইদিন ওই শিক্ষিকা কোনো প্রকার ছুটি না নিয়ে স্কুলে আসেননি। শনিবার (১২ মার্চ) স্কুলে এসে অন্যান্য শিক্ষকরা ক্লাসে চলে গেলে তিনি আমার কাছে হাজিরা খাতা চান এবং হাজিরা খাতায় অনুপস্থিতির জায়গায় স্বাক্ষর করার কথা বলেন। আমি হাজিরা খাতা দিতে অস্বীকৃতি জানাই এবং অন্যান্য শিক্ষকরা অফিসরুমে এলে হাজিরা খাতা দেব বলি। এসব নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে তিনি আমাকে অপদস্ত করেন।
এ বিষয়ে ফুলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শীতেষ চন্দ্র সরকার বলেন, দুজনই অভিযোগ দেওয়ার পর তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে কমিটির সদস্যদের নাম বলা যাবে না। তবে তিন দিনের মাঝে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।