English

21 C
Dhaka
বুধবার, ডিসেম্বর ১৮, ২০২৪
- Advertisement -

মোবাইল ফোন কিনতে বাবার সাথে অপহরণ নাটক, পার পেল না ছেলে!

- Advertisements -

মোবাইল ফোন কিনতে বাবার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের জন্য অপহরণ নাটক সাজিয়েও পার পেল না মাদ্রাসায় নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক কিশোর ও তার সহযোগীরা। অবশেষে প্রযুক্তির সহযোগিতায় পুলিশ সত্যটা বের করে আনে এবং কথিত অপহৃত  মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে উদ্ধার এবং এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করে।

পুলিশ সূত্র জানায়, গাইবান্ধার বাসিন্দা মো. আলতাফুর রহমান বগুড়ার গাবতলী থানায় হাজির হয়ে অভিযোগ করেন, তার ছেলে গাবতলী উপজেলার নশিপুর ইউনিয়নে একটি মাদ্রাসার ৯ম শ্রেণিতে পড়ালেখা করে। তার ছেলে মাদ্রাসা থেকে নিখোঁজ হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইলে কর্তৃপক্ষ জানায়, ওই শিক্ষার্থী তাদের বলেছে , তার বাবা ঢাকা থেকে বগুড়া শহরে তার জন‍্য কয়েকটি বই পাঠিয়েছেন এবং তাকে বইগুলো আনতে বলেছে।

এরপর বইগুলো আনতে গত ১৪ সেপ্টেম্বর বেলা ২টার দিকে ওই শিক্ষার্থী মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে যায়। কিন্তু পরে আর মাদ্রাসায় ফিরে না আসলে তাকে বহু স্থানে খুঁজেও পাওয়া যায় না। এক পর্যায়ে ১৬ সেপ্টেম্বর রাত ১১টা ১০ মিনিটের দিকে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি ওই শিক্ষার্থীর বাবার মোবাইল নাম্বারে ফোন দেয়। ওই ফোন নম্বর থেকে তার ছেলে নিজেই তাকে জানায়, তাকে অপহরণ করে একটি ঘরে আটকে রাখা হয়েছে। এরপর আরেক ব্যক্তি ফোনটি কেড়ে নিয়ে তাকে বলে, তার ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে তাকে ফিরে পেতে হলে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে, অন্যথায় তাকে হত্যা করা হবে। একথা বলেই ফোনটির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।

পরে এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বিপিএম-পিপিএম’র  নির্দেশনায় এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. স্নিগ্ধ আখতারের তত্ত্বাবধানে ডিবি বগুড়ার ইনচার্জ মো. মোস্তাফিজ হাসানের নেতৃত্বে টিম ডিবি বগুড়া ও গাবতলী থানা পুলিশের একটি যৌথ টিম প্রযুক্তির সহযোগিতায়  সুনির্দিষ্ট  গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ১৭ সেপ্টেম্বর বেলা ৩টার দিকে শহরের পুরান বগুড়া তিনমাথা রেলগেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে কথিত অপহৃত মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে উদ্ধার এবং এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করে।

তবে এসময় অপর একজন পালিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃতরা হলো মো. খায়রুল ইসলাম লিমন (২০) ও মো. মেহেদী হাসান (২২)।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উদ্ধার হওয়া ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও তার চাচাতো ভাই খায়রুল ইসলাম লিমন জানায়, ওই শিক্ষার্থীর দামি মোবাইল কেনার প্রয়োজন ছিল। এজন্য সে নিজেই অপহরণের নাটক সাজিয়ে তার বাবার কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা আদায় করতে চেয়েছিল। এছাড়া তাদের টাকার প্রয়োজন।

মোবাইল কেনার পর তারা অবশিষ্ট টাকা ভাগ করে নিত। পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা গত ১০ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টার দিকে একত্রিত হয়ে পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৪ সেপ্টেম্বর ওই শিক্ষার্থী কুরিয়ার সার্ভিস থেকে বই নিয়ে আসার কথা বলে মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে লিমনের সাথে বগুড়া শহরের সাতমাথায় দেখা করে ও লিমনের মেসে আসে। তারপর সেখানে লিমনের রুমমেট আকাশ এবং পাশের রুমের মেহেদীকে সঙ্গে নিয়ে সদরের পীরগাছা এলাকায় যায়।

এরপর ওই শিক্ষার্থী সেখান থেকে আকাশের মোবাইল নাম্বার থেকে তার বাবাকে ফোন দিয়ে বলে যে তাকে অপহরণ করে একটি ঘরে আটকে রাখা হয়েছে।  এরপর আকাশ ফোনটি নিয়ে ওই শিক্ষার্থীর বাবাকে জানায়, আপনার ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে তার মুক্তিপণের জন্য তিন লাখ টাকা দিতে হবে।

অন্যথায় তার ছেলেকে হত্যা করা হবে বলেও হুমকি দেয়। পরে ফোনটির সংযোগ কেটে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে তারা মুক্তিপণ দাবি শেষে মোবাইল ফোন বন্ধ করে সকলে একত্রে মেসে এসে আত্মগোপন করে থাকে। এরপর পুলিশ প্রযুক্তির সহযোগিতায় মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে উদ্ধার এবং দুজনকে গ্রেফতার  করে সক্ষম হয়।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন