বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের অভিযানে মহাস্থান বাসস্ট্যান্ড আবাসিক হোটেল নূরজাহান পার্কে অনৈতিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে কপোত-কপোতীসহ ১৭ জনকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেল জরিমানা করেছেন। রবিবার (৪ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১১টায় ৯৯৯ নাম্বারে ফোন পেয়ে শিবগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী অফিসার আলমগীর কবীরের নেতৃত্বে ও এএসপি-সার্কেল আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকীর নির্দেশনায় শিবগঞ্জ থানার দায়িত্ব প্রাপ্ত নবাগত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সিরাজুল ইসলামের সহযোগিতায় মহাস্থান নূরজাহান পার্ক আবাসিক বোর্ডিং থেকে ৭ জন নারী ও ১০ জন পুরুষকে আটক করা হয়।
এলাকাবাসী ও বন্দরের একাধিক ব্যবসায়ীরা জানান, ঐতিহাসিক মহাস্থানগড় হযরত শাহ সুলতানের মাজারের সামনে নূরজাহান পার্ক এবং বোডিং নামের অন্তরালে দীর্ঘ দিন থেকে প্রকাশ্যে দেহ ব্যবসা পরিচালনা হয়ে আসছে। পুলিশ মাঝে মাঝে অভিযান চালালেও আবার কোন অদৃশ্য শক্তির কারণে ছাড়া পেয়ে আবারও ব্যবসা চালিয়ে যায় স্থানীয়দের কাছে অনেকটা ডাল ভাতের মত বলে তারা মনে করেন। সচেতন এলাকাবাসী আরও জানান, মহাস্থান বাসস্ট্যান্ডে কিছুক্ষণ দাড়ালে দেখা যায়, বিভিন্ন এলাকার তরুন- তরুণী, প্রেমিক যুগল, স্কুল- কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা প্রেমের টানে এসব বোডিংগে অবস্থান নিয়ে অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। অনেক মধ্য বয়সীদের পরকিয়া জমিয়ে এই বোডিংয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা পাড়ি দিতেও দেখা যায়। যা রীতিমতো সমাজের অবক্ষয় বটে। মহাস্থানের চিহ্নিত দেহ ব্যবসার আখড়া হিসেবে পরিচিত বোর্ডিং গুলো প্রতিনিয়ত অভিযান চালিয়ে প্রকৃত মালিকগণকে গ্রেফতার সহ বোডিং গুলো সিলগালা করার দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলমগীর কবীর জানান, নূরজাহান আবাসিক হোটেলে অনৈতিক কর্মকান্ড চলছিল। এর আগে হোটেলের ম্যানেজার মুচলেকা দিলেও কথা রাখেনি। অসামাজিক কার্যকালাপের সঙ্গে জড়িত হোটেল নূরজাহানের ম্যানেজার আলমগীর কবির (৪০) তার দুই সহযোগী আমিনুল ইসলাম (২৮) ও আরিফুল ইসলাম (২৬) এবং ৭ নারী ও ৭ পুরুষকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে প্রেরণ করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতে হোটেলের ম্যানেজারকে ৬ মাস তার দুই সহযোগীকে ১ মাসের এবং অনৈতিক কাজে লিপ্ত শাহীন মিয়া(২৭), সানিমুল্লাহ(৩০) ও রিমি খাতুন(৩০) কে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। এছাড়া বাকি ১০জনকে ২০০ টাকা জরিমানাসহ মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সিরাজুল ইসলাম জানান, শিবগঞ্জ উপজেলার আবাসিক হোটেল গুলোতে অসামাজিক কার্যকলাপ চলছে এমন খবর আগে থেকে পেয়ে বেশ কয়েক বার বোডিং কর্তৃপক্ষকে এধরণের দেহ ব্যবসা বন্ধের তাগিদ দিয়েছিলাম। অনেকেই কথা শুনলেও নূরজাহান পার্ক হোটেল বেপরোয়া ভাবে অসামাজিক কাজ ঠিকই পরিচালনা করে আসছিলো এমন সংবাদ পেয়ে নূরজানান আবাসিক বোডিং অভিযান পরিচালনা করি। বগুড়ার ঐতিহাসিক মহাস্থানগড় অলীর লীলাভূমিতে কোন দেহ ব্যবসা হতে দেওয়া যাবেনা এটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন। সেই সাথে তিনি জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক সমাজ, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ সহ সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।