চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের একটি ভোটকেন্দ্রের সামনে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (২৭ জানুয়ারি) সকালে পাহাড়তলী ওয়ার্ডের ইউসেফ আমবাগান টেকনিক্যাল স্কুল ভোটকেন্দ্রে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
নিহত ওই যুবকের নাম আলাউদ্দিন। তিনি কুমিল্লা জেলার সুলতান মিয়ার ছেলে।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আলাউদ্দিন তালুকদার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে ভোটগ্রহণ শুরুর পর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের ওই ভোটকেন্দ্রে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী এবং বিদ্রোহী প্রার্থী মাহামুদুর রহমানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন আলাউদ্দিন। তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সংঘর্ষে আরও ৪ জন আহত হয়েছেন। একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ভোটকেন্দ্রের বাইরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও ওই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে বলে জানিয়েছেন সহকারী রিটার্নিং অফিসার বশির আহমদ। তিনি বলেন, কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে। বাইরে ঝামেলা হলেও এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন। এদের মধ্যে নারী ভোটার ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৩ জন এবং পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৯২ হাজার ৩৩ জন।
নির্বাচনে মোট ২৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে মেয়র পদে ৭ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৭১ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৫৭ জন। মেয়র পদে ৭ প্রার্থী হলেন- নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের এম রেজাউল করিম চৌধুরী, ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন।
এছাড়া মিনার প্রতীক নিয়ে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের এমএ মতিন, আম প্রতীক নিয়ে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আবুল মনজুর, হাতপাখা প্রতীক নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. জান্নাতুল ইসলাম, চেয়ার প্রতীক নিয়ে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ ও হাতি প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে খোকন চৌধুরী নির্বাচন করছেন।
নির্বাচন নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে মাঠে আছেন ২০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং ৬৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এছাড়া মোট ১৮ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যও কাজ করছেন চসিক নির্বাচনে। এর মধ্যে ৭ হাজার ৭৭২ জন্য পুলিশ সদস্য, ২৫ প্লাটুন বিজিবি, র্যাবের ৪১টি টিম, পুলিশের রিজার্ভ টিম ও ৩ হাজার ৮০০ আনসার সদস্য মোতায়েন রয়েছেন নির্বাচনী এলাকায়।
নির্বাচনে ৭৩৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৪১৬টি কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ ও ৩১৯টি কেন্দ্রকে সাধারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে নির্বাচন কমিশন। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে ১৮ জন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং সাধারণ কেন্দ্রগুলোতে ১৬ জন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন।
এবারের নির্বাচনে ২টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। এর মধ্যে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী তারেক সোলেমান সেলিমের মৃত্যুতে ওই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। যা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি। এছাড়া ১৮ নম্বর পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন কাউন্সিলর প্রার্থী মো. হারুনুর রশিদ।