কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পৌর শহরের চন্ডিবের এলাকার দুই গ্রামের সংঘর্ষে অগ্নিসংযোগসহ ব্যাপক ভাঙচুর হয়েছে। গতকাল ২২ আগস্ট রোববার রাত ৯টায় চন্ডিবের দক্ষিণ পাড়ায় এলাকায় নবী হোসেন গ্রুপের সাথে পলতাকান্দা এলাকার রতন মিয়ার গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। এ সময় চন্ডিবের দক্ষিণ পাড়া এলাকার হিন্দু পাড়ার ৪টি ঘর ও ৪টি দোকান ভাংচুর ও লুটপাট করে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও পুলিশের সহযোগিতায় দীর্ঘ ৩ ঘণ্টা পর ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, তুচ্ছ ঘটনাকে করে দীর্ঘ ১ সপ্তাহ যাবত দুই পাড়া চন্ডিবের দক্ষিণ পাড়া ও পলতাকান্দার মধ্যে নানা তর্ক বিতর্কের অবশেষে ২২ আগস্ট রাতে ২ পাড়ার মধ্যে সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। এ সময় দুই পাড়ার প্রায় শতাধিক লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে একে অপরের উপর আক্রমণ করলে ব্যাপক সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এতে চন্ডিবের দক্ষিণ পাড়ার ২ জন গুরুত্বর আহতসহ আনুমানিক ৩০ জন আহত হয়। এদের মধ্যে চন্ডিবের এলাকার আলী আকবরের ছেলে সানী (১২), নূরুল ইসলামের ছেলে হৃদয় (২৫) কে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এছাড়াও পলতাকান্দা ও চন্ডিবের এলাকার সজীব (১৮), রাসেল (২২), মাসুদ (২১), ইমরান (১৭), জাভেদ (১৪), জুয়েল (২০), উজ্জ্বল (১৮) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
এ সময় হিন্দু পাড়া এলাকার ইলিয়াছ কাজী, আরিজ মিয়া, চানমোহন বর্মন, সুমন বর্মন, সুভল চন্দ্র বর্মন বলেন, পলতাকান্দা এলাকার কিছু লোক অতর্কিতভাবে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আমাদের ঘর-বাড়ি, দোকান-পাট ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এক পর্যায়ে তারা বাড়ি ঘর, দোকান ঘরের ইট পাটকেল ও ককটেল নিক্ষেপ করে। রামদা দিয়ে বাড়ি-ঘর কুপিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় একটি মোটরসাইকেল ও একটি লেপতোষকের দোকানে পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
বেশ কিছু বিল্ডিংয়ের থাই গ্লাস ভাঙচুর করে। রাস্তার পাশে বিল্ডিং নির্মাণের জন্য ইট রাখা ছিল এগুলো নিক্ষেপ করে আমাদের উপর আক্রমণ করে। বাড়ি-ঘর থেকে লুটপাট করে নগদ টাকা ও স্বর্ণ অলঙ্কার নিয়ে যায়। এ সময় অনেকে আহত হয়। রাত ৮টায় অগ্নিসংযোগ দিলেও রাত ১২টায় ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় তারা অভিযোগ করে বলেন, এ সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এ বিষয়ে ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হলে প্রথমে তা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে আরো অধিক ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে ভৈরব উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দদের সাথে নিয়ে দীর্ঘক্ষণ পর সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনি।
ঘটনার সময় একটি সেলুন ও একটি লেপতোষকের ঘরে আগুন দিলে তা ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনার পর ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও ৪টি দোকান পুড়ে ছাঁই হয়ে যায়। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন।