মোঃ আলাল উদ্দিন, ভৈরব প্রতিনিধি: প্রাচীর ভেঙ্গে অবরুদ্ধ এক পরিবারকে রাস্তা দিতে গিয়ে কিছু দুস্কৃতিকারীরা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জ্বিত হয়ে হামলার চেষ্টা করেন ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ এর উপর।
আজ ৮ মে সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের গাজিরটেক এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এ সময় স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে ইউএনও, ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মাকছুদুল আলম, কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান লিটন মিয়াসহ স্থানীয় কয়েকজন নেতৃবৃন্দ নিয়ে অবরুদ্ধ হুমায়ুনের পরিবারকে রাস্তা বুঝিয়ে দিতে এলাকাবাসীদের বলা হয়।
অপরদিকে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি করার পায়তারা করে। প্রশাসনের কঠোর হুশিয়ারীতে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এ নিয়ে কোন দ্বন্দ্ব হবেনা বলেও প্রতিশ্রুতি দেন।
সোহেল মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ, হাজী আসাদ মিয়া, মেহের আলী মুন্সীসহ এলাকাবাসীরা জানান, হুমায়ুন একজন খারাপ প্রকৃতির লোক। সে বিভিন্ন সময়ে মানুষের জমি জাল দলিল সৃষ্টি করে মানুষকে হয়রানি করে। তাছাড়া এলাকার জমি সংক্রান্ত ত্রুটি থাকলে ওইসব জমি কৌশলে সে নিজের দখলে নিয়ে যায়। এমনকি গাজিরটেক কবরস্থানের জায়গাটিও সে দখল করে নিয়েছিল। এসব কারণে গাজিরটেক এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে তার চলাচলের রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়। প্রশাসন আজ এসে এলাকাবাসীকে না জানিয়েই কবরস্থানের নিরাপত্তা বাউন্ডারী দেয়াল ভেঙ্গে ফেলে। এতে এলাকার কিছু লোক ক্ষিপ্ত হয়ে প্রশাসন ও সাংবাদিকদের উপর হামলা চালানোর প্রস্তুতি নেই। বিষয়টি এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নজরে আসলে দ্রুত ঘটনাটি সমাধানের চেষ্টা করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) অফিস সূত্রে জানা যায়, ৮ মে হুমায়ুনের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও), ভৈরব থানা পুলিশ, আনসার সদস্য ও সাংবাদিকসহ গাজিরটেক এলাকায় যায়। ওই স্থানে গিয়ে কবরস্থানের ভাউন্ডারী সত্যতা পেয়ে দেয়াল ভেঙ্গে হুমায়ুনের পরিবারকে যাতায়াতের রাস্তা করে দেয়। এ সময় হঠাৎ করে এলাকার সাইজ উদ্দিন, আজিজ মিয়া, সাজিদ মিয়া, জয়নাল মিয়া, অপু মিয়াসহ এলাকার নারী-পুরুষরা টেটা, লাঠিসোটা ও ইটপাটকেল নিয়ে প্রশাসনের উপর হামলা চালানোর চেষ্টা করে।
হামলার বিষয়টি স্বীকার করে ইউএনও মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ জানান, ভৈরব উপজেলার কালিকাপ্রসাদ গাজিরটেক এলাকায় স্থানীয়দের দেয়া ইটের প্রাচীরে হুমায়ুন নামের এক ব্যক্তি অবরুদ্ধ হয়ে আছে। এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশ হলে বিষয়টি আমার নজরে আসে। আজ ৮ মে অবরুদ্ধ পরিবারের পক্ষ থেকে আমি একটি অভিযোগ পায়। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ প্রশাসন ও সাংবাদিকসহ গেলে এর সত্যতা পাওয়া যায়। পরে অবরুদ্ধ প্রাচীর ভেঙ্গে ওই পরিবারকে রাস্তা দিতে গেলে এলাকার কতিপয় কিছু লোকজন আমাদের উপর চড়াও হবার চেষ্টা চালায়।স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সহায়তা ও পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিষয়টি শান্ত হয়। হামলা চালানোর চেষ্টাকারী দুস্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ২১ এপ্রিল শুক্রবার ভৈরব উপজেলার গাজিরটেক এলাকায় কবরস্থানের পাশে এলাকাবাসীর বাউন্ডারী দেয়াল নির্মাণ করে। এতে করে হুমায়ুনের পরিবার অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। এমনকি তাদের ব্যবহৃত পয়নিস্কাশনের পানি চলাচলের পাইপও বন্ধ করে দেয়। এতে করে তারা দীর্ঘদিন যাবত বন্দি জীবন কাটিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করে।