English

17 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৪
- Advertisement -

বাসের দ্রুত গতির কারণে শিশু মরিয়মের মৃত্যু: র‌্যাব

- Advertisements -

সাহায্য চাইতে গিয়ে রাইদা পরিবহনে উঠেছিলো শিশু মরিয়ম আক্তার (১০)। তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিতে চালক গাড়ির গতি কমালেও একপর্যায়ে তা বাড়িয়ে দেন। আর বাস থেকে নামতে গিয়ে সে নিচে পড়ে যায়। এরপরই বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে তার  মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন র‌্যাব কর্মকর্তারা।
শনিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব কর্মকর্তারা বলেন, ‘অজ্ঞাত মেয়ে শিশুর মৃত্যুর ঘটনাটি প্রথম থেকেই বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রচার হলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে শিশুটির বাবা মো. রনি মিয়া জানতে পারেন, ভাটারা থানায় একটি মেয়ে শিশুর মরদেহ পাওয়া গেছে। ওই দিন বিকেলে মেয়েটির বাবা থানায় হাজির হয়ে মেয়ের মরদেহ শনাক্ত করেন। ভাটারা থানায় একটি মামলাও করেন। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১ এর সদস‌্যরা অভিযান চালিয়ে গত ১২ নভেম্বর টঙ্গী ও আব্দুল্লাহপুর থেকে রাইদা পরিবহনের চালক রাজু মিয়া ও তার সহকারী ইমরান হোসেনকে গ্রেপ্তার করেন।’
সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘গত ৯ নভেম্বর  চালক রাজু মিয়া ও তার সহকারী ইমরান হোসেন প্রতিদিনের মতোই রাইদা পরিবহনের  বাস (ঢাকা মেট্রো ব- ১৪-৯০২২) নিয়ে পোস্তগোলা থেকে দিয়াবাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন। সকালে যানবাহন ও যাত্রী কম থাকায় চালক দ্রুত গাড়ি চালাচ্ছিলেন। বাসটি প্রগতি সরণির যমুনা ফিউচার পার্কে পৌঁছলে মরিয়ম বাস যাত্রীদের কাছ থেকে সাহায্য নিতে গাড়িতে উঠে। ইমরান হোসেন এ সময় যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া নিচ্ছিলেন। হেলপার ইমরান তখন লক্ষ্য করেন, একজন ছিন্নমূল পথশিশু গাড়িতে উঠে অর্থ সাহায্য চাচ্ছে। তাই তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিতে চালককে গাড়ির গতি কমাতে বলেন। মরিয়ম ওই সময় দরজার কাছে যায় নামার জন‌্য। এ সময় বাসের চালক গাড়ির গতি হালকা কমিয়ে শিশুটিকে নামতে বলে।  মরিয়ম তাড়াহুড়া করে নামার সময় হঠাৎ করে চালক গাড়ির গতি বাড়িয়ে দেন। এতে মরিয়ম বাসের দরজা থেকে ছিটকে রাস্তায় পড়ে। এ দৃশ্য দেখে গাড়িতে উপস্থিত যাত্রী ও পথচারীরা গাড়ি থামাতে বললেও চালক দ্রতবেগে দিয়াবাড়ির দিকে চলে যান।’
তিনি জানান, পরবর্তীতে গ্রেপ্তার আসামিরা দিয়াবাড়ি থেকে পোস্তগোলা পর্যন্ত ফিরতি ট্রিপ নিয়ে আসার সময় জানতে পারেন রাস্তায় পড়ে যাওয়া শিশুটি মারা গেছে। পরে তারা পোস্তগোলায় হাসনাবাদের একটি বাস ডিপোতে গাড়িটি রেখে আত্মগোপনে চলে যান।
র‌্যাব কর্মকর্তা জানান, রাজু মিয়া প্রায় ৬ বছর ধরে রাইদা পরিবহনের গাড়ি চালায়। ইমরান হোসেন আগে গার্মেন্টস শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। ছয় মাস ধরে তিনি রাইদা পরিবহনে হেলপার হিসেবে কাজ করছেন।
উল্লেখ‌্য, গত ৯ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি শিশুটি অচেতন অবস্থায় যমুনা ফিউচার পার্কের উল্টো পাশের ফুটপাতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে শিশুটিকে নিয়ে এক নারী ও পুলিশের একজন সদস্য কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসকেরা শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে শিশুটির বাবা লাশ শনাক্ত করেন। তবে পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে শিশুটির নাক দিয়ে রক্ত পড়া এবং যৌনাঙ্গ ফুলে থাকার কথা বলা হয়।
র‌্যাব জানায়, ওই শিশুর মৃত্যুর রহস্য উন্মোচনে তার পরিবার, প্রতিবেশী এবং ঘটনাস্থলে অবস্থানরত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। শিশু মরিয়ম তার পরিবারের সঙ্গে খিলক্ষেত থানার কুড়াতলী এলাকায় বসবাস করত। তার বাবা একজন প্রাইভেটকার চালক। ২০১৯ সালে শিশুটি স্থানীয় একটি স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হলেও অর্থের অভাবে তার পড়াশোনা বন্ধ ছিলো। সে নিয়মিত অর্থ সহায়তা পেতে কুড়িল এবং এর আশপাশের এলাকায় যাতায়াত করতো।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন