বগুড়া পৌর শহরের নিশিন্দারা মধ্যেপাড়া এলাকায় বাড়ির বারান্দা থেকে তাসলিমা আক্তার (২২) নামে এক গৃহবধূর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার হয়েছে। এ সময় শোবার ঘর থেকে তার শিশুসন্তান কাজিম আলীকে (৩) হাত বাঁধা ও মাথায় আঘাত পাওয়া অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যার মধ্যে কোনো একসময় হতাহতের এই ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
বর্তমানে শিশু কাজিম গুরুতর আহত অবস্থায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
নিহত তাসলিমা বগুড়া শহরের নিশিন্দারা মধ্যেপাড়া এলাকার সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী।
বগুড়া সদর থানা পুলিশ জানিয়েছে, গৃহবধূ তাসলিমার মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে থেতলিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়াও শিশু কাজিমের মাথাতেও হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করা হয়। ঘটনাস্থলে নিহত তাসলিমার মরদেহের পাশ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ আরও জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তাসলিমার সঙ্গে তার ভাবী মল্লিকা খাতুনের সর্বশেষ কথা হয়। পরে দুপুর ১টার দিকে তাসলিমার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের কয়েকদফা চেষ্টা করে বন্ধ পান মল্লিকা। রাতে নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে ফিরে সিরাজুল চাবি দিয়ে বাড়ির মূল ফটক খুলে বারান্দায় স্ত্রীর রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান। এ সময় তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে শিশু কাজিমকে হাত বাধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশটি উদ্ধার করে।
ঘটনাস্থল থেকে পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই আলামত সংগ্রহ করেছে। এছাড়াও র্যাব-১২ বগুড়া একাধিক দল ঘটনাস্থলে কাজ করেছে।
নিহতের স্বামী সিরাজুল ইসলাম বলেন, রাতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে ফিরে তাসলিমার রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পাই। দুপুরের পর থেকেই তাকে মুঠোফোনে পাচ্ছিলাম না। ভেবেছিলাম ছেলে মুঠোফোনে গেম খেলে বন্ধ করে রেখেছে। এসে দেখি সব শেষ। কারও সঙ্গে আমার শত্রুতা নেই। জানি না ক্ষতি কে করল।
নিহতের ভাবী মল্লিকা খাতুন বলেন, সকালে তাসলিমার সঙ্গে কথা হয়েছিল। এরপর থেকেই নম্বর বন্ধ পেয়েছি। আমাদের কারও সাথে শত্রুতা নেই। বাড়ির টাকা-পয়সা ও গহনা সব ঠিকই আছে। শুধু তার মুঠোফোন নিয়ে গেছে খুনিরা। পরিচিত কেউই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
বগুড়া সদর থানা পুলিশের ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ বলেন, নিহতের মরদেহ সুরহতাল শেষে শজিমেক হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে। হত্যাকাণ্ডের কিছু ক্লু হাতে এসেছে। একাধিক দল মাঠে কাজ করছে।