একজন ভিভিআইপি ও ভিআইপিদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করতেন। এরপর ইমো অ্যাপের মাধ্যমে সেই নম্বরগুলোর পরিচয় নিশ্চিত করতেন। অপরজন আত্মীয় সেজে এসব নম্বরে নারী কণ্ঠে কথা বলতেন। আলাপের এক পর্যায়ে সুযোগ বুঝে অসুস্থতাসহ নানা সমস্যার কথা বলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হাতিয়ে নিতেন লাখ লাখ টাকা।
এমনই অভিনব প্রতারণার ফাঁদ পেতেছিলেন মো. আলী আকবর হীরা (৫১) ও তার ছেলে মো. শেরে আলী জিতু (২০)। সম্প্রতি রাজধানীর কোতোয়ালী থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত তিনটি মোবাইল ফোন ও চারটি সিম। এছাড়া প্রতারণার মাধ্যমে আয় করা টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের প্রমাণ পায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, জিতু ভিআইপি বা বিশেষ সিরিজের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করতেন। এরপর অভিনব কায়দায় জেনে নিতেন সেই নম্বর ব্যবহারকারীর নাম-পরিচয়। পরে তা তুলে দিতেন বাবা হীরার হাতে। এরপর হীরা মোবাইলের ‘ম্যাজিক ভয়েস’ অপশন ব্যবহার করে আত্মীয় পরিচয়ে ফোন করতেন সেসব নম্বরে। সাধারণ কিছু আলাপচারিতার পর দূর সম্পর্কের আত্মীয়কে জরুরি হাসপাতালে নেয়াসহ বিভিন্ন সমস্যার কথা বলে পাঁচ হাজার টাকা পাঠাতে বলতেন। এভাবে তাদের প্রাথমিক ফাঁদে কেউ পা দিলে শুরু হতো ধাপে ধাপে টাকা আদায়।
স্বজনকে সাহায্যের কথা বলে প্রথমে পাঁচ হাজার টাকা নেয়ার পর, আবার কল দিয়ে বলতেন, ‘ভুল করে ৫ হাজার চেয়েছি আসলে ১০ হাজার টাকা প্রয়োজন।’ ১০ হাজার টাকা পাঠানোর পর ভিন্ন কৌশলে আরও টাকা আদায় করতেন। যতক্ষণ না ভুক্তভোগী বুঝতে পারছেন যে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন ততক্ষণ পর্যন্ত এভাবে টাকা আদায় চলতে থাকত বাবা-ছেলের।
গ্রেফতার হওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদে দুজন জানিয়েছেন, বাংলা সিনেমা দেখে তারা এমন অভিনব প্রতারণা শিখেছেন।
ভুক্তভোগীদের বিশ্বাস অর্জন
বাবা ছেলের প্রধান টার্গেট থাকতেন বিভিন্ন ভিভিআইপি সিম ব্যবহারকারী। তাই তারা ভিভিআইপি সিম সিরিজের নম্বরগুলোতে ক্রমানুসারে এক এক ডিজিট পরিবর্তন করে কল করতেন। কল করার আগে ইমো অ্যাপের মাধ্যমে সেই নম্বর ব্যবহারকারীর নাম জেনে নিতেন। কল রিসিভ করার পর নারী কণ্ঠে কথা বলে দূর সম্পর্কের আত্মীয় পরিচয় দিতেন। এভাবে ধীরে ধীরে ভুক্তভোগীদের কাছে বিশ্বাস অর্জন করতেন।