মাদকের হাট বাজারে পরিনত হয়েছে বগুড়ার ঐতিহাসিক মহাস্থানের বেশকিছু এলাকা। সাম্প্রতিক বগুড়ার মহাস্থানে আবাসিক বোর্ডিং এর অন্তরালে জমজমাট দেহব্যবসা একাধিক বার পত্র পত্রিকা ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশের পর প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তা এখন বন্ধ। কিন্তু মহাস্থানগড় যার পাদদেশে শায়িত আছেন বিখ্যাত ওলীয়ে কামেল হযরত শাহ সুলতান (রহঃ)। এ অতীত সভ্যতার লীলাভূমি হযরত শাহ সুলতানের পবিত্র মাজারের চতুর্পাশে মাদকের আঁকড়া করে ক্রেতা-বিক্রেতাদের স্বর্গরাজ্যে পরিনত হয়েছে এমনটাই মনে করছেন সচেতন এলাকাবাসী। বিশেষ করে গড়মহাস্থান মালখালি ও শালবাগান এলাকায় প্রতিদিন প্রকাশ্যে কেজি কেজি গাঁজা বিক্রি হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের (২৯ আগস্ট) রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় শিবগঞ্জ থানা পুলিশের অভিযানে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মহাস্থান এলাকা থেকে সাড়ে ৯ কেজি গাঁজাসহ ৩জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই সাড়ে ৯ কেজি গাঁজার নেপথ্যে ছিল মালখালি এলাকার মাদকের গডফাদার যার নাম প্রকাশ করে সংবাদের শিরোনামে আনা হয়েছিল। তারপরেও প্রশাসনের কোন হস্তক্ষেপ দৃশ্যমান চোখে পড়েনি। একটি সূত্র জানায়, প্রতিদিন বিকাল থেকে মালখালি হঠাৎ পাড়া নামক স্থানে প্রকাশ্যে গাঁজা বিক্রি হয়। গাঁজা কিনতে সেখানে মাদক সেবীদের সিরিয়াল বলে দেয় কতটা বেপরোয়া।
বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মালখালি তথা মহাস্থানগড়ে ভ্রমনে আসা দর্শনার্থীদের সাথে অভিনব কায়দায় মিশে যায় মাদক ক্রেতা-বিক্রেতারা।
চতুর্দিক রাস্তার যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে এখানে পুলিশ অভিযান চালালেও তার আগেই খবর পেয়ে সটকে পড়ে মাদক ক্রেতা ও ব্যবসায়ী। বুধবার (১৬ফেব্রুয়ারী) সরজমিনে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, মাত্র ৪/৫জন মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে নিয়ন্ত্রণ করছে মাদক ব্যবসা। পাইকারি ও খুচরা গাঁজা বিক্রি করছে। সেখানে নারীদের নিয়োগ দিয়ে গাঁজা ও ইয়াবা সরবরাহ করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়- মহাস্থান পশ্চিমপাড়া, মধ্যপাড়া, আকন্দপাড়া, করতোয়া ব্রিজের পাশে ও মহাস্থান মাহীসওয়ার ডিগ্রী কলেজের আশেপাশে ফেনসিডিলের মহড়া কম নয়। উল্লেখ্য এলাকায় ফেন্সিডিল ব্যবসায়ীরা দাপটের সাথে বিক্রি করছে। ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না৷
প্রতিদিন এই এলাকাগুলোতে বৈরাগত ব্যক্তিরা মোটরসাইকেল ও অন্যান্য যানবাহন নিয়ে মাদক কিনতে ভীড় জমায়। এছাড়াও মহাস্থান বোরহান উদ্দিনের মাজারের পাশে মহাস্থানের হাতিবান্ধা নাগরকান্দি মহাস্থান ইসলামি ব্যাংক টাওয়ার নামক স্থানের পিছনে হরদমে মাদক বিক্রি হয়। জানা যায়, এসব এলাকায় মাদকের বড়বাবুরা সেবনকারীদের হাতে মাদক নিরাপদে পৌঁছে দেওয়ার জন্য রয়েছে ৪/৫ জন করে বিশ্বস্ত এজেন্ট তথা সরবরাহকারী।
মোবাইলে যোগাযোগ করে তারা চাহিদামত পৌঁছে দেয় গাঁজা ফেন্সিডিল, ইয়াবা ও হেরোইন। সারাদিন টুকটাক বিক্রি হলেও মূলত বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে মূল বেচাকেনা।
অনেক মাদক ব্যবসায়ী আবার পুলিশের হাতে কয়েকবার আটক হলেও আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে আবার তাদের ব্যবসা শুরু করে। এলাকাবাসী যুব সমাজকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্ত থেকে ফিরতে শিবগঞ্জ থানার নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক কুমার দাস (পিপিএম) ও জেলার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী (বিপিএম) বার এর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।