বগুড়ার ধুনট উপজেলায় যৌতুকের অতিরিক্ত টাকা না পেয়ে সাথি খাতুন (২২) নামের এক গৃহবধূকে তার স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি ও ননদ মিলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। এ ঘটনায় গৃহবধূর চাচা আলম সেখ বাদী হয়ে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার জোড়খালি গ্রামের শাহজাহান আলী নামের এক প্রবাসীর মেয়ে সাথি খাতুনকে প্রায় তিন বছর আগে বিয়ে করেন একই এলাকার গজারিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে সাজু মিয়া। বিয়ের সময় ৭০ হাজার টাকা যৌতুক দেন কনের বাবা। তাদের দাম্পত্য জীবনে কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। সাজু মিয়া পেশায় প্রসাধনী সামগ্রী বিক্রেতা। বিয়ের পর সুখেই কাটছিল তাদের দাম্পত্য জীবন।
কিন্তু এক বছর আগে থেকে সাজু মিয়া তার স্ত্রীকে বাবার বাড়ি থেকে আরও তিন লাখ টাকা যৌতুক আনতে বলে। কিন্তু সাথির মা-বাবা অতিরিক্ত যৌতুকের টাকা দিতে রাজি হননি। এ কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে সাথির ওপর নানাভাবে নির্যাতন চালায় স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি।
নির্যাতনের একপর্যায়ে গত রোববার বিকেলে সাথির শরীরে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় তার স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি ও ননদ। এতে সাথির শরীরের প্রায় ৪০ শতাংশ পুড়ে গেছে।
এ ঘটনার জানতে পেরে পরিবারের লোকজন স্বামীর বাড়ি থেকে সাথিকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় সাথির চাচা আলম সেখ বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাজু মিয়া ও তার মা-বাবা এবং বোনকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে সাজু ও তার পরিবারের লোকজন পলাতক রয়েছে।
এ বিষয়ে সাজু মিয়া বলেন, ‘আমাদের দাম্পত্য জীবন সুখের ছিল। স্ত্রীর কাছ থেকে কোনো প্রকার যৌতুক চাওয়া হয়নি। তাকে নির্যাতন কিংবা তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দিয়ে হত্যার চেষ্টাও করা হয়নি। সাথি নিজের শরীরে নিজেই আগুন ধরিয়ে দেয়। তবে কী কারণে শরীরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে, তা জানা সম্ভব হয়নি।’
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, ‘মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রাখা হয়েছে।’