ফ্লাইওভারে যাতায়াত করছেন, কিন্তু হঠাৎ অদৃশ্য সুতা গলায় আটকে পড়ে গেলন। তারপরে… চট্টগ্রামের ফ্লাইওভারে এমন ঘটনাই ঘটছে। ফ্লাইওভারের নির্জন জায়গা দেখে দুই পাশের রেলিংয়ে বেঁধে রাখা হয় নাইলনের সুতা—যা দ্রুত ছুটে চলা চালকদের চোখে পড়ে না। এসব সুতার ফাঁদে আটকে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন অনেকে। মোটরসাইকেলসহ উল্টে পড়া মাত্র আশপাশ থেকে ছুটে আসে ওঁত পেতে থাকা চক্রের সদস্যরা। এরপর তারা দুর্ঘটনার শিকার হওয়া ব্যক্তির টাকা-পয়সা ও মূল্যবান সামগ্রী ছিনিয়ে নেয়।
সম্প্রতি চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট থেকে যাওয়ার পথে মুরাদপুর ফ্লাইওভারে পাওয়া গেছে বেশ কিছু সুতা। যেসব উদ্ধার করেছেন কয়েকজন বাইক আরোহী। এই ফ্লাইওভারে প্রায়ই নাকি সুতা বেঁধে বাইক আরোহীদের ফেলে দেওয়া হয়। চালক পড়ে গেলে নিচ থেকে ছুটে আসে ছিনতাইকারী চক্র। লুটপাট করা হয় মোটরসাইকেল আরোহীর সব কিছু।
সম্প্রতি একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যেখানে এক ব্যক্তি বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার থেকে সুতা উদ্ধার করে দেখাচ্ছেন। ওই ব্যক্তি বলেন, ‘এখানে যারা বাইক চালাবেন তারা সতর্ক থাকবেন। দেখুন আমি কতগুলো সুতা উদ্ধার করলাম। পুরো ফ্লাইওভারে এ রকম ধারালো সুতা রয়েছে। ঠিক আমার সামনের বাইকের লোকটার গলা কেটে গেল। আমি থেমে সুতাগুলো উদ্ধার করলাম। ওরা নিচে দাঁড়িয়ে থাকে ঘুড়ি ওড়ানোর নামে।’
বহদ্দারহাট থেকে জিইসি যাওয়ার পথে মুরাদপুরের কাছ থেকে ওই ব্যক্তি সুতাগুলো উদ্ধার করেন। ১০ জুলাই পোস্ট করা ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে অনেকেই নিজেদের ভয়ংকর অভিজ্ঞতা শেয়ার করছেন।
এসব ফ্লাইওভারে বেঁধে রাখা নাইলনের মজবুত সুতার টানে হাত ও গলায় জখম হয়ে মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন কয়েকজন চালক।
গত বছর চট্টগ্রামে সুতা বেঁধে ছিনতাইকারী চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছিল র্যাব।
র্যাব-৭-এর সহকারী পুলিশ সুপার মাহমুদুল হাসান মামুন বলেছিলেন, ‘গভীর রাতে ছিনতাইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালালে তারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বলেছে, দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় রাতের বেলা ছিনতাই করে। এ ছাড়া নগরীর বিভিন্ন ফ্লাইওভারে সুতা বেঁধে যাত্রীদের আটকে ছিনতাই করত।’