লালমনিরহাট: লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় এক কলেজছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ করে ভারতের পাচারের অভিযোগে তিলক চন্দ্র নামে এক প্রেমিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভারতীয় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) বিকেলে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার ও অভিযুক্ত প্রেমিককে গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ভিকটিমের ভাই কামরুজ্জামান লুলু।
গ্রেফতার তিলক চন্দ্র জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার গেন্দুকুড়ি এলাকার ধনঞ্জয়ের ছেলে।
ভিকটিমের পরিবার ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, হাতীবান্ধার একটি কলেজের ছাত্রী কুলসুমের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন তিলক চন্দ্র। বিয়ে করার জন্য প্রেমিকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০২১ সালের ০৫ ডিসেম্বর কলেজে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয় কুলসুম। এরপর প্রেমিক তিলকের সঙ্গে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় কুলসুমের বড় ভাই কামরুজ্জামান লুলু বাদী হয়ে প্রেমিক তিলকসহ পাঁচজনকে আসামি করে হাতীবান্ধা থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন।
কিন্তু মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হাতীবান্ধা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুকুমার রায় ওই কলেজছাত্রীকে উদ্ধার না করেই দুই আসামিকে বাদ দিয়ে ইতোমধ্যে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অপরদিকে, প্রেমিক তিলক তার প্রেমিকাকে বিয়ে না করে কৌশলে ভারতের নিয়ে আত্মগোপনে থাকেন। সেখানে তাকে মানসিক নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে পাচারকারীদের হাতে বিক্রির চেষ্টা করলে কৌশলে কলেজছাত্রী সব তথ্য তার কাছের এক বন্ধুকে ভিডিও বার্তায় পাঠায়। ভিডিও বার্তায় ওই ছাত্রী বাঁচার আঁকুতি জানায়। যা কলেজছাত্রীর পরিবারের হাতেও পৌঁছে। অবশেষে ওই ছাত্রীর পরিবার ভারতীয় পুলিশের সহায়তায় অপহৃত ছাত্রীকে উদ্ধার ও অভিযুক্ত তিলক চন্দ্রকে গ্রেফতার করে গত সপ্তাহে ভারতীয় আদালতে সোপর্দ করে।
এরপর ওই ছাত্রীর বাঁচার আঁকুতির ভিডিও বার্তাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে অভিযুক্ত অন্যদের এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
অপহরণের পর কলেজছাত্রী ভিডিও বার্তায় দাবি করেছেন, তাকে ভারতে পাচারের সব কিছু মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুকুমার রায় জানেন। পাচারের সঙ্গে ওই পুলিশ কর্মকর্তা জড়িত। ওই ছাত্রীর সঙ্গে তার পরিচিত একজনের ফোনে কথা বলার সময় এমন দাবি করেন।
তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাতীবান্ধা থানার এসআই সুকুমার রায়ের দাবি, তার নামে টাকা নেওয়া ও পাচারে সহযোগিতা করার অভিযোগটি সাজানো। তিনি শুধু মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন।
হাতীবান্ধা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহা আলম বলেন, পুরো বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। সত্যতা যাচাই করার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।