খুলনার আড়ংঘাটা থানা এলাকায় পুলিশ পরিচয়ে স্বামীর চোখ বেঁধে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগের চারজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন, বেলাল মোড়ল, আজিজুর রহমান মিঠু, জিহাদ মুন্সি ও মো. রাসেল। তাদের মধ্যে আজিজুর ও বেলাল ইজিবাইকচালক, জিহাদ মুন্সি বেকারি শ্রমিক ও রাসেল স্থানীয় একটি কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের ছাত্র।
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় খুলনার র্যাব-৬ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মোস্তাক আহমেদ এ তথ্য জানান।
ব্রিফিংয়ে র্যাব সিও বলেন, খুলনা নগরীর এক দম্পতি বুধবার সন্ধ্যায় হাঁটতে বের হন। হাঁটতে হাঁটতে তারা বাইপাস এলাকায় চলে যান। রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাইপাস থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলে দুটি মোটরসাইকেলে চারজন তাদের গতিরোধ করেন। প্রথমে তারা পুলিশ সদস্য বলে নিজেদের পরিচয় দেন। পরে দুজনের দেহ তল্লাশি করেন ওই চার ব্যক্তি।
র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, এসময় গ্রেফতাররা তাদের কাছে জনতে চান তারা স্বামী-স্ত্রী কী না। ভুক্তভোগী ‘হ্যাঁ’ বলার পরও তাদের কিছু দূরে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে গিয়ে স্বামীর চোখ বেঁধে ফেলেন। পরবর্তীকালে ওই বাড়ির ছাদে নিয়ে চারজন পালাক্রমে গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন। এসময় তারা ভিডিওধারণ করেন।
ভুক্তভোগীর স্বামী বলেন, রাত সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তার স্ত্রীর ওপর চলে নির্যাতন। স্ত্রীর মুখে ঘটনার বিবরণ জেনে তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। কিন্তু কাছে টাকা না থাকায় রাত ২টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করার পর বাড়ি চলে যান।
পরে বিষয়টি সম্পর্কে তথ্য পেয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে র্যাব সদস্যরা ভুক্তভোগীর স্বামীর ফোন নম্বর সংগ্রহ করে হাসপাতালে আসতে অনুরোধ করার পর সেখানে আসেন তারা।
ওই গৃহবধূ বলেন, ধর্ষণের সময় দুর্বৃত্তরা ভিডিওধারণ করে। পরে হুমকি দেয় এবং ফোন নম্বর দিয়ে তাকে বলা হয়, যখন প্রয়োজন হবে তখন তাদের সঙ্গে দেখা করতে হবে। পরবর্তীকালে বুধবার সকালে র্যাব প্রযুক্তির মাধ্যমে ওই নম্বরের ব্যবহারকারীকে শনাক্ত করে। পরে অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগীর স্বামী। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আড়ংঘাটা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তপন কুমার সিংহ বলেন, ভুক্তভোগী বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।
পরবর্তীকালে র্যাবের সহযোগিতায় মামলার মূল চার আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। আসামিরা বর্তমানে র্যাব হেফাজতে রয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, আমাদের কাছে আসামিদের হস্তান্তর করার পর জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে, এর সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে কী না। গ্রেফতারদের রিমান্ডে নেওয়া হতে পারে।