ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে দুই তরুণী গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। জুসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে তাদের গণধর্ষণ করার অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুজনকে গতকাল মঙ্গলবার রাতে আটক করেছে থানা পুলিশ।
মামলা ও পীরগঞ্জ পুলিশ জানান, পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে সোমবার বিকেলে পীরগঞ্জ উপজেলার সেনুয়া গ্রামের আলতাফুর রহমান ভোলার ছেলে অটোচার্জারচালক নয়নের (২১) সঙ্গে দেখা করতে আসে পাশের রাণীশংকৈল উপজেলার ভোলাপাড়া গ্রামের দুই তরুণী। শহরের পূর্ব চৌরাস্তায় নয়নের সঙ্গে দেখা হয় তাদের। সেখানে নয়ন তার বন্ধু ফরিদ, হিরণ ও সেলিমের সঙ্গে ওই দুই তরুনীর পরিচয় করে দেন। এরপর এক তরুণী তার মোবাইল ফোনের ব্যাটারি কিনতে চাইলে নয়ন জানান, লোহাগাড়া বাজারে তার পরিচিত লোকের দোকান রয়েছে এবং সেখানে কম দামে ব্যাটারি কিনে দেবেন। এমন কথা বলে নয়ন তার বন্ধুদের সহায়তায় কৌশলে দুই তরুণীকে উপজেলার লোহাগাড়া বাজারে নিয়ে যায়। সেখানে ব্যাটারির দাম বেশি হওয়া নয়ন ও তার ওই তিন বন্ধু জনৈক সবুজের অটোচার্জারে করে তরুণীদের আবার পীরগঞ্জ শহরে নিয়ে আসে।
শহরের পূর্ব চৌরাস্তার রনি টেলিকমে মোবাইলের ব্যাটারি কিনতে তাদের সন্ধ্যা হয়ে যায়। এরপর রাত হয়ে যাওয়ায় নয়ন তাদের বাড়ি না পাঠিয়ে নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া কথা বলে কৌশল সবুজের অটোচার্জারে উঠিয়ে তাদের নিয়ে সেনুয়ার দিকে রওনা হয়। ওই অটোচার্জারে তরুণীদের সাথে নয়ন ছাড়াও হিরণ, সেলিম ও ফরিদও ছিল। চার্জার গাড়িতে তরুণীদের জুসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে নয়নের বাড়িতে না নিয়ে গিয়ে ভোমরাদহ ইউনিয়নের চিলাপাড়া গ্রামে চার্জারচালক সবুজের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর নয়ন, সবুজ, হিরণ, সেলিম ও ফরিদ মিলে তাদের ধর্ষণ করে। এরপর তরুণীদের সবুজের এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে দুই তরুণীকে পাশের জনৈক নজিবুলের আখক্ষেতে নিয়ে গিয়ে আবার পাঁচজন মিলে ধর্ষণ করে। এরপর রাতে তাদের ভোমরাদহের জনৈক মসলিমার বাড়িতে নিয়ে যায় ধর্ষকরা। মসলিমা তাদের বাড়িতে ঢুকতে না দেওয়ায় রাত ৩টার দিকে পাশের রেললাইনে নিয়ে যাওয়া হয় তরুণীদের। সেখানে জনৈক ব্যক্তির হাতের টর্চের আলো দেখে ধর্ষকরা তাদের (তরুণীদের) ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে ভোরে লোহাগাড়া বাজারে এসে অটোচার্জার যোগে বাড়ি গিয়ে ঘটনার কথা পরিবারের লোকজনকে জানায় গণধর্ষণের শিকার তরুণীরা।
পীরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খায়রুল আনাম ডন জানান, খবর পাওয়ার সাথে সাথেই পুলিশ ধর্ষকদের গ্রেপ্তার অভিযান শুরু করে। দুই ধর্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ভিকটিমদের ডাক্তারি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন