মাদারীপুরে ডাসার থানাধীন বালিগ্রাম ইউনিয়নের পূর্ব বোতলা গ্রামে নিখোঁজের ১১ মাস পর প্রেমিকের বাড়ির পেছনে সেপটিক ট্যাংকিতে মিলল কিশোরীর গলিত লাশ। শনিবার রাত ৮টার দিকে এই মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
স্থানীয় ও মামলার বিবরণে জানা যায়, পূর্ব বোতলা গ্রামের চাঁনমিয়া হাওলাদারের দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে মুর্শিদা আক্তারের সঙ্গে একই গ্রামের মজিদ আকনের ছেলে সাহাবুদ্দিন আকনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই সম্পর্কের সূত্র ধরেই গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের ১৮ তারিখ মুর্শিদাকে বাড়ি থেকে চিকিৎসা করানোর কথা বলে প্রেমিক সাহাবুদ্দিন আকন নিয়ে যায়। এরপর থেকেই নিখোঁজ হয় মুর্শিদা। নিখোঁজ থাকায় ওইদিন বিকালে মুর্শিদার পরিবার ডাসার থানায় একটি জিডি করে। এতে কোন প্রতিকার না হওয়ায় গত বছরের ৪ঠা মার্চ সাহাবুদ্দিনসহ আরও ৫ জনকে আসামী করে ডাসার থানায় একটি মামলা করেন মুর্শিদার মা মাহিনুর বেগম। দীর্ঘদিন মামলার কোন অগ্রগতি না হওয়ায় মামলাটি পিবিআইতে স্থানান্তরের আবেদন করে বাদী পক্ষ। পরে মামলাটি মাদারীপুর গোয়েন্দা পুলিশ তদন্তভার গ্রহণ করে।
এরপর গত বৃহস্পতিবার মামলার আসামী সাহাবুদ্দিন আকন আদালতে আত্মসমর্পণ করে।
পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই তারিকুল ইসলাম আসামী সাহাবুদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে। আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। আজ শনিবার বিকালে সাহাবুদ্দিন হত্যাকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্ততার বিষয় গোয়েন্দা পুলিশের কাছে স্বীকার করে এবং লাশ গুম করার কথাও স্বীকার করে। পরে সাহাবুদ্দিনের দেয়া তথ্য মোতাবেক সন্ধ্যা ৮টার দিকে তার বাড়ির সেফটিক ট্যাংক থেকে মুর্শিদার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতের মামা মিরাজ তালুদার বলেন, ‘আমার ভাগ্নিকে গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে বাড়ি নিয়ে যায়। দীর্ঘদিন নিখোঁজ থাকার পরে আমরা থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ অসহযোগিতা করে। পরে এক পর্যায় মামলা হলেও পুলিশ আসামীদের গ্রেপ্তার করেনি। এরপরে মামলা যখন পিবিআইতে যায় তখন আসামী আদালতে আত্মসমর্পন করে। পরে আসামীর দেয়া স্বীকারোক্তি মোতাবেক আজ সেফটিক ট্যাংক থেকে মুর্শিদার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ব্যপারে মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল হান্নান মিয়া জানান, ‘সাহাবুদ্দিনের দেয়া তথ্য মোতাবেক আসামীর বাড়ির সেফটিক ট্যাংকি থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।