রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া যৌনপল্লী থেকে এক তরুণীকে উদ্ধার করেছে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ। গত শুক্রবার (১৩ আগস্ট) ওই তরুণীকে (২৫) উদ্ধার করা হয়।
প্রায় দেড় বছর আগে নায়িকা বানানোর কথা বলে তাকে নিয়ে এসে দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে বিক্রি করে দেন এক দালাল। উদ্ধার হওয়া তরুণী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর থানার এক গ্রামের দরিদ্র ভ্যানচালকের মেয়ে।
এ ঘটনায় দৌলতদিয়া যৌনপল্লির বাসিন্দা (আবুলের বাড়ির ভাড়াটিয়া) সাত্তার শেখের মেয়ে রিতা বেগম (২৭) ও তার স্বামী কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী থানার বিদ্যুৎপাড়া এলাকার সামছুল আলমের ছেলে সোহেল রানাকে (৩০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে এক এজাহারের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, উদ্ধার হওয়া তরুণীর বাবা একজন দরিদ্র ভ্যানচালক। দরিদ্র হওয়ায় অতি কষ্টে তাদের সংসার চলত। প্রায় সাত বছর আগে হেমায়েতপুরের কানারচর এলাকায় বিয়ে হয় ওই তরুণীর। স্বামীর বাড়িতে থাকা অবস্থায় এক যুবকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ওই যুবক তাকে প্রায়ই নায়িকা বানানোর প্রলোভন দেখাত।
এর সূত্র ধরে ওই যুবক গত বছরের জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে শুটিংয়ের কথা বলে তাকে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে তাকে দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে রিতা বেগম ও সোহেল রানার কাছে ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়।
এ সময় আসামি রিতা বেগম ও সোহেল রানা তার কাছ থেকে মোবাইল কেড়ে নিয়ে জোর পূর্বক তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করেন এবং বাইরে যাতে যেতে না পারে সে জন্য ঘরের মধ্যে শিকল দিয়ে আটকে রাখেন।
শুক্রবার (১৩ আগস্ট) তার কাছে একজন খদ্দের এলে তাকে ঘটনাটি খুলে বলেন ওই তরুণী। এরপর ওই ব্যক্তির মোবাইল নিয়ে ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে উদ্ধারের জন্য সহায়তা চায়। এর কিছুক্ষণ পরেই গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে এবং আসামিদের গ্রেপ্তার করে
থানায় নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর বলেন, উদ্ধার হওয়া তরুণী বাদী হয়ে রিতা বেগম, সোহেল রানা ও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। গ্রেপ্তার দুই আসামিকে শনিবার আদালতের মাধ্যমে রাজবাড়ীর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।