বগুড়ায় অর্থের বিনিময়ে এক নারীর সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়া নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে খুন হন ১৫ বছর বয়সী কিশোর রাকিব হাসান। এই ঘটনায় নিহতের বন্ধু এক কিশোরসহ দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গত শনিবার তাদের আদালতে পাঠানো হলে সজীব ১৬৪ ধারায় হত্যার ঘটনা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এর আগে ওই দিন সকালে তাদের গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নিজ গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার হিয়াতপুর গ্রামের ১৫ বছর বয়সী একজন কিশোর ও একই এলাকার ২০ বছর বয়সী আহসান হাবীব সজীব। রবিবার সকাল ১১ টায় পিবিআই এর পুলিশ সুপার আকরামুল হোসেন সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, বগুড়ার সোনাতলার লাহিড়ীপাড়া গ্রামে চলতি মাসের ৩ তারিখ সকাল ১১টার দিকে অজ্ঞাত এক কিশোরের লাশ পাওয়া যায়। পরে জানা যায় সেই কিশোরের বাড়ি গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার হিয়াতপুর গ্রামে। এই ঘটনায় নিহতের ভাই বেলাল হোসেন সোনাতলা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পিবিআই এর পুলিশ সুপার আরও জানান, নিহত রাকিব ও গ্রেফতার হওয়া দুইজনের বাড়ি একই এলাকায়। এইজন্য তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। গত মে মাসের ৩১ তারিখ গ্রেফতার হওয়া সজীব নিহত রাকিবকে জানায় এক মেয়েকে টাকার বিনিময়ে শারীরিকভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার জন্য সোনাতলার চমরগাছা লাহিড়ীপাড়া এলাকার পতিত জমিতে নিয়ে আসতে হবে। কথা অনুযায়ী ওইদিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে সজীব নিহত রাকিব ও গ্রেফতার আরেক কিশোরকে নিয়ে সোনাতলার ওই এলাকাটিতে যায়।
সেখানে পৌঁছে গ্রেফতার সজীব ও নিহত রাকিবের মধ্যে সবার আগে কে শারীরিকভাবে ঘনিষ্ঠ হবে এই নিয়ে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে সজীব গ্রেফতার হওয়া ওই কিশোরের কাছে থাকা একটি লাঠি দিয়ে রাকিবের মাথায় আঘাত করে। আঘাত পেয়ে রাকিব মাটিতে লুটিয়ে পড়লে এলোপাতাড়ি ভাবে তার মাথায় আরও কয়েকবার আঘাত করা হয়।
ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে সজীব রাকিবকে ডাক দিলে সে সাড়া দেয় না। একপর্যায়ে তিনি রাকিবের গলা চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে লাশটি টেনে হেঁচড়ে একটি ডোবায় ফেলে ও কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়।
পুলিশ সুপার আকরামুল হোসেন বলেন, কিশোর রাকিবের লাশ উদ্ধারের পর থেকে তদন্তে নামে পিবিআই। পরে স্থানীয়ভাবে নানা রকম তথ্য-উপাত্ত ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এই হত্যার রহস্য উদঘাটন করা হয়।