নাটোরের নলডাঙ্গায় এক কিশোরীকে (১৪) ধর্ষণের দায়ে প্রাপ্তবয়স্ক দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলার অপর আসামির বয়স কম হওয়ায় তাকে ১০ বছরের আটকাদেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এ আদেশ দেন। রায়ের সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
নাটোর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (বিশেষ পিপি) অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মো. মিঠুন মণ্ডল (২৬) জেলার নলডাঙ্গা উপজেলার মোমিনপুর উত্তরপাড়ার মৃত সলেমান মণ্ডলের ছেলে ও একই গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে মো. আশরাফুল ইসলাম (২৬)।
আটকাদেশপ্রাপ্ত সাব্বির হোসেন একই এলাকার সাইফুল ইসলামের ছেলে। ঘটনার সময় মিঠুন ও আশরাফুল ইসলামের বয়স ২৩ বছর এবং সাব্বির হোসেনের বয়স ছিল ১৭ বছর ০৭ মাস ১৯ দিন।
রায়ে মিঠুনকে ৫০ হাজার টাকা ও আশরাফুল ইসলামকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে ভিকটিমকে দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক।
অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান জানান, ২০২১ সালের ৩১ মে সকালে মামাতো বোন ও দুই প্রতিবেশীর সঙ্গে ছাগল নিয়ে মাঠে যায় সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রী। দুপুরের দিকে সেখানে হাজির হন মিঠুন, আশরাফুল ও সাব্বির। কথা আছে বলে ওই কিশোরীকে ডেকে একটি আখ ক্ষেতের মধ্যে নিয়ে যান তারা। সেখানে তাকে ধর্ষণ করেন মিঠুন।
আর আশরাফুল ও সাব্বির এ কাজে তাকে সহায়তা করেন। ধর্ষণের সময় মেয়েটি চিৎকার দিলে তার সঙ্গীরা ও স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসেন। এসময় সাব্বির পালিয়ে গেলেও স্থানীয় লোকজনের হাতে ধরা পড়েন মিঠুন ও আশরাফুল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যান। এ ঘটনায় ভিকটিম নিজেই বাদী হয়ে ওই তিনজনকে অভিযুক্ত করে ১ জুন নলডাঙ্গা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করে।
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা নলডাঙ্গা থানার সেই সময়ের উপপরিদর্শক (এসআই) মোশারফ হোসেন তদন্ত শেষ করে ওই তিনজনকে অভিযুক্ত করে একই বছরের ২৬ আগস্ট আদালতে চার্জশিট দেন। মামলার দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষপ্রমাণের ভিত্তিতে আজ দুপুরে বিচারক এ রায় দেন।