ধর্ষণের শিকার এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ছেলে সন্তান প্রসব করেছেন। তবে ঠান্ডাজনিত কারণে নবজাতককে বাচানো যায়নি। এদিকে ধর্ষণের পর গ্রাম্য শালিশে ওই প্রতিবন্ধীকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে ঘরে উঠাবে এমন আশ্বাস দিলেও কিছু মাতাবরদের প্ররোচনায় তা হয়নি। পরবর্তীতে প্রতিবন্ধীর পিতা বাদী হয়ে টাঙ্গাইল কোর্টে একটি মামলা দিলেও দীর্ঘদিনেও পুলিশ কোনো পদক্ষেপ গ্রহন করেনি বলে অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায়, দেলদুয়ার উপজেলার কৈজুরী গ্রামের এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধীকে গত বছর ১৭ জুলাই ধর্ষণ করে পাশের গ্রাম শুভকির মৃত ছালাম মিয়ার ছেলে দুই সন্তানের জনক অটো চালক আলাল মিয়া। পাশাপাশি বাড়ি ঘর হওয়ার সুবাদে ওই প্রতিবন্ধীর বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত ছিল আলালের। আলাল বিবাহিত ও দুই সন্তানের জনক হওয়ায় প্রতিবন্ধীর পরিবার কোনো সন্দেহের চোখে দেখেনি। সেই সুযোগে আলাল বুদ্ধি প্রতিবন্ধীকে ফুঁসলিয়ে বিভিন্ন সময় ধর্ষণ করতো। পরবর্তীতে সে গর্ভবতী হয়ে পড়লে বিষয়টি সকলের নজরে আসে। এ ঘটনা জানাজানি হলে ধর্ষিতার পিতা স্থানীয় ইউপি সদস্য আজাদ মিয়ার কাছে বিষয়টি জানায়। পরবর্তীতে স্থানীয় মাতবর আজমত আলী, প্রিষ্টালী খান, আছর আলী, আরিফ ও আনোয়ারসহ সকলে বসে গ্রাম্য শালিশের মাধ্যমে দোষী আলাল মিয়া তার দোষ স্বীকার করে বিচার মেনে নেয়।
শালিশে রায় হয় যে, আলাল বুদ্ধি প্রতিবন্ধীকে দুই লাখ টাকা কাবিনমূলে বিবাহ করবে এবং তার নামে এক শতাংশ জমি লিখে দিবেন ও সন্তান প্রসবের খরচ হিসেবে মেয়ের বাবাকে ৭০ হাজার টাকা প্রদান করবে। এ রায় মেনে এক সপ্তাহের সময় নিয়ে কয়েকজন মাতবরের কুপরামর্শে আত্মগোপনে চলে যায় আলাল। পরে এ ঘটনায় প্রতিবন্ধী স্বপ্নার বাবা বাদী হয়ে গত ১০ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতে ধর্ষণকারী আলালসহ ৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। কোর্ট মামলাটি টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেন। এর মধ্যে গত ৮ এপ্রিল প্রসব ব্যথা উঠলে প্রতিবন্ধীকে টাঙ্গাইল মা ও স্বাস্থ্য ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয়। সেখানে সে এক ফুটফুটে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। তার নাম রাখা হয় বাবু। বুকে ঠান্ডা নিয়ে জন্মানো বাবু অসুস্থ হয়ে পড়লে ১২ এপ্রিল তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে রাত ১১টার দিকে বাবু মারা যায়।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই (তদন্ত কর্মকর্তা) মো. আলমগীর হোসনে জানান, মামলার বাদীর অসহযোগিতার কারণে মামলার তেমন অগ্রগতি করতে পারিনি। ভিকটিমকে কয়েকবার নিয়ে আসতে বলেছিল মেডিকেল করার জন্য কিন্ত আনেননি। প্রতিবন্ধীর বাচ্চা প্রসব হয়েছে তাও আমাকে জানায়নি। এবং মারা গেছে এটিও আমি সাংবাদিকদের কাছ থেকে শুনতে পেয়েছি। এখন আমি বাচ্চার ডিএনএ পরীক্ষার জন্য লিখতেছি।