English

22 C
Dhaka
মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ২৪, ২০২৪
- Advertisement -

দ্বিতীয় সন্তানও মেয়ে, তাই পুকুরে ফেলে হত্যা করল বাবা!

- Advertisements -

প্রথমটি মেয়ে সন্তান। এরপর প্রত্যাশা ছিল ছেলের। কিন্তু আবারও মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। এ নিয়ে সবসময় স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া লেগে থাকতো।

এই পারিবারিক কলহের জের ধরে জাকির হোসেন নামের এক ব্যক্তি তার ১৪ মাস বয়সী ঘুমন্ত কন্যাশিশুকে পুকুরে ফেলে দিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এই ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের উঁচুলবাড়িয়া গ্রামে। সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে ঘুমন্ত শিশুটিকে তুলে নিয়ে পুকুরের পানিতে ছুড়ে ফেলেন জাকির হোসেন। মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভোররাতে তার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুকুর থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। পরে জাকির হোসেনকে (৪৫) আটক করা হয়। তিনি উঁচুলবাড়িয়া গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে। স্থানীয়রা থানায় সংবাদ দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে। সেই সাথে তার বাবা জাকিরকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। নিহত শিশুটির নাম মোছা. হুমায়রা খাতুন।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সাত বছর আগে জাকিরের সঙ্গে পাশের নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের নামা সিংড়াপাড়া গ্রামের রমজান আলীর মেয়ে রাবেয়া খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছরের মাথায় তাদের একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। তার নাম মোছা. জান্নাতি খাতুন। বর্তমানে বয়স ছয় বছর। এরপর বাবা জাকিরের প্রত্যাশা ছিল ছেলে সন্তানের। কিন্তু দ্বিতীয় সন্তানও মেয়ে হয়। এতে ক্ষুব্ধ ছিলেন তিনি। সোমবার সন্ধ্যায়ও এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া হয়।

নিহত শিশুর মা রাবেয়া খাতুন বলেন, ‘মধ্যরাতে ঘুম থেকে জেগে দেখি আমার মেয়ে হুমায়রা খাটের ওপর নেই। পরে পরিবারের সবাইকে ঘুম থেকে ডেকে বিষয়টি জানাই, আমার বোন-দুলাভাইকে খবর দেই। স্থানীয় লোকজনকেও জানানো হয়। সবাই এসে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। সন্তানকে না পেয়ে একাধিকবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। একপর্যায়ে  আমার স্বামীকে চাপ দেন তারা। পরে মেয়েকে পুকুরে ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করেন স্বামী। ’

জাকিরের ভায়রা সাইফুল ইসলাম বলেন, জাকিরের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ভোররাতে পুকুরে নেমে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় শিশুটিকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এরপর জাকিরকে আটক করে থানায় খবর দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।

জানতে চাইলে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান খন্দকার বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাসানকে ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তাকে নির্দেশনা দিয়েছি।

পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাসান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, শিশুটির লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। এছাড়া ঘুমন্ত শিশুটিকে পুকুরে ফেলে হত্যার কথা স্বীকার করায় ঘাতক বাবা জাকিরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।

অভিযুক্ত বাবা জাকিরের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, হঠাৎ মাথা গরম হয়ে যাওয়ায় এমন কাজ করেছেন। তিনি বলেন, ঘটনার পর এখন নিজের ভুল বুঝতে পারছি। এজন্য আমি অনুতপ্ত। সবার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে তিনি আরও বলেন, আমার মতো এ ধরনের কাজ যেন আর কেউ না করেন।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন