প্রায় এক বছর পর প্রযুক্তির মাধ্যমে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার গৃহবধূ বাবলী খাতুন ফেলানী (২৭) হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করে প্রধান আসামি আবুল হোসেনকে (৪২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত সোমবার শশুরবাড়ি থেকে আবুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আবুল হোসেন রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার খালাসপীর মোনাইল গ্রামের বাসিন্দা এবং ফুলবাড়ী পৌর এলাকার তেঁতুলিয়া গ্রামের মৃত সোবাহান আলীর জামাতা। তিনি দীর্ঘদিন থেকে শশুরবাড়িতে থেকেই সংসার করতেন। আবুল হোসেন পেশায় ভ্রাম্যমান মুরগি বিক্রেতা।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বাবলী খাতুন ফেলানী ফুলবাড়ী পৌরসভার ৭ নম্বর নয়াপাড়া গ্রামের রিকশাচালক আশিকুর রহমানের স্ত্রী। তিনি ২০১৯ সালে ১ নভেম্বর বাড়ির পাশের একটি জমিতে ছাগল চরাতে যান। সন্ধ্যা নেমে এলেও বাড়িতে না ফেরায় ফেলানীকে খোঁজাখোঁজি শুরু করে বাড়ির লোকজন। একপর্যায়ে জমির আইলে ফেলানীকে পড়ে থাকতে দেখে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয় স্বজনরা। সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় ফুলবাড়ী থানা পুলিশ। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায় ফেলনীকে খুন করা হয়েছে। পরে চলতি বছরের ১৩ আগস্ট ফেলানীর মা মোসলেমা বেগম বাদী হয়ে ফুলবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফুলবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দেবী কান্ত বলেন, ‘মামলা দায়েরের পর প্রযুক্তির মাধ্যমে ফেলানীর ব্যবহৃত মুঠোফোনের সূত্র ধরে আবুল হোসেনকে তার শশুরবাড়ি থেকে গত সোমবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার দিনাজপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুজ্জামানের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করেন তিনি।
স্বীকারোক্তিতে আবুল হোসেন জানিয়েছে, দীর্ঘদিন থেকে তার সাথে মুঠোফোনে প্রেমের সম্পর্ক ছিল ফেলানীর। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ফেলানীর সাথে প্রায় মেলামেশা এবং শারীরিক সম্পর্ক করত আবুল। গত ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর বিকেলে ফেলানী আবুল হোসেনকে পালিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা এবং হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে আবুল হোসেন ফেলানীর গলা চেপে ধরলে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। পরে ফেলানীর মুখে মাটিচাপা দিয়ে গভীর নলকূপের পাকা ড্রেনের মধ্যে ফেলে পালিয়ে যায় আবুল হোসেন।
ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রযুক্তির ব্যবহার করে ফুলবাড়ীর গৃহবধূ বাবলী খাতুন ফেলানী হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি আবুল হোসেনকে তার শশুরবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে আবুল হোসেনকে আদালতে সোপর্দ করলে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ফেলানী হত্যার দায় স্বীকার করে সে। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।’
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন