ঢামেকের ২১২ নম্বর ওয়ার্ডের বারান্দায় অভিনব কায়দায় প্রতারক চক্র রোগীর স্বজন সেজে অন্য রোগীর স্বজনদের সাথে মিশে সুকৌশলে সম্পর্ক গড়ে তোলে খাবারের সাথে চেতনা নাশক কিছু মিশিয়ে খাইয়ে অচেতন করে, তাদের সাথে থাকা স্বর্ণ অলংকার হাতিয়ে নেন তারা।
শনিবার (১৭অক্টোবর) বিকালে এমনই একটি ঘটনা ঘটে ঢামেক হাসপাতালের গাইনী বিভাগের ২১২ নম্বর ওয়ার্ডের বারান্দায় মরিয়ম (৬৫) নামে এক রোগীর স্বজন কে পান খাইয়ে অচেতন করে, তার গলায় থাকা এক ভরি ওজনের চেইন ও কানের দুল নিয়ে যায়।
দীর্ঘ সময় শুয়ে থাকা অবস্থায় দেখে অনান্য স্বজনরা তাকে ডাকাডাকি করেও তাকে ঘুম থেকে তুলতে পার ছিলনা, পরে বুঝতে পারেন, তাকে অজ্ঞান করা হয়েছে। পাশাপাশি দেখতে পান তার চেইন ও কানের দুল নেই। পরে স্বজনরা তাকে সেখান থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসেন। জরুরী বিভাগে চিকিৎসক তাকে স্টোমাক ওয়াশ করান। পরে তাকে নিয়ে গাইনি ওয়ার্ডের বারান্দায় রাখেন। এসব কথা জানিয়েছেন মরিয়মের মেয়ের জামাই হারুন অর রশিদ সহ অনান্য স্বজনেরা।
হারুন বলেন, তার শালিকা অন্তসত্ত্বা বিথী (২৮) কে ডেলিভারির জন্য গত (১৩,অক্টোবর) গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করা। হয়েছে। তার খেজমতের জন্য তার সাথে থাকার জন্য, শুক্রবার বিথির মা মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদীখান থেকে হাসপাতালে আসেন তিনি। এবং ঐ ওয়ার্ডের বারান্দায় রাত্রি যাপন করেন। তিনি বলেন বিকালে ঐ বারান্দায় উনাকে অচেতন করে তার কাছে থাকা স্বর্ণ অলংকার নিয়ে গেছে। সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, তিনি গভীর নিদ্রায় রয়েছেন। তাকে তার অনান্য স্বজনরা তাকে বাতাস করছেন।
তার পাশে আরেক রোগীর স্বজন মনির হোসেন, বলেন আমি দেখেছি দু’জন মধ্য বয়সী মহিলা তার সাথে কথাবার্তা বলছেন, এবং কিছুক্ষণ পর তাকে পান খাওয়া চ্ছিলেন। তখন তাদের বলছিলাম কি দিচ্ছেন, আপনাদের কি হয় তিনি। তখন প্রতিত্তোরে তারা (প্রতারক চক্র) বলেন তিনি আমাদের খালা হয়। তারা তার মাথায় তেল দিয়ে দিচ্ছিল। এর কিছুক্ষণ পর আমার স্ত্রী র জন্য ভিতর থেকে ডাক আসলে আমি চলে যাই। ঘন্টা খানিক পর এসে শুনি তিনি ঘুম থেকে উঠছেন না।
পাশের আরেক রোগীর স্বজন আলেনুর বেগম বলেন, আমি দেখেছি দুই মহিলা তার সাথে কথাবার্তা বলতে, তার পাশেই বসা ছিল। আমি তো বেভেছি উনারা তারই আত্মীয়।
ঢামেক হাসপাতালের সেই ওয়ার্ডে উপস্থিত প্লাটন কমান্ডার (পিছি) মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি শুনে আমি এসেছি। এবং তার স্বজরা বলছেন ঐ মহিলা কে অচেতন করে তার কাছ থেকে স্বর্ণের চেইন ও দুল নিয়ে গেছে প্রতারক দুই নারী।
সেখানে কর্মরত আরেক আনসার সদস্য আব্দুল কাইউম বলেন, গত মাসেও এভাবেই আরো দুই ঘটনা ঘটেছিল। ঢামেক হাসপাতালে আনসারদের প্রধান পাল্টন কমান্ডার মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি, সেখানে আমাদের লোক পাঠিয়েছি। আনসার সদস্যরা থাকা সত্বেও কিভাবে এরকম ঘটনা ঘটে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি নতুন জয়েন্ট করেছি। দেখেন সেই ওয়ার্ডে পুরুষ ভিজিটরদের ডুকতে দেয়া হয় না। তাদের কে নজরদারি তে রাখা হয়।
কিন্তু মহিলা প্রতারক রা রোগীর স্বজন সেজে প্রবেশ করে, অন্য রোগীর স্বজনদের সাথে সম্পর্ক করে এভাবে অজ্ঞান করে টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়। সে ক্ষেত্রে রোগীর স্বজনদেরও সচেতন থাকা উচিত বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন বিষয়টা কর্তিপক্ষকে অভিহিত করেছি। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মোঃ বাচ্চু মিয়া বলেন, আমরা বিষয়টি শুনেছি, তবে কেউ অভিযোগ করতে আসেননি।
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন