ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চক্রের মূলহোতাসহ ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে, র্যাব-৩ এর একটি দল দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের ৩১৪টি সিটের ৮২টি টিকিট ও বিপুল পরিমাণ মোবাইল সিমসহ তাদের গ্রেপ্তার করে।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) বিকেলে র্যাব-৩ শাহজাহানপুর ঝিলপাড় সদর ব্যাটালিয়ন কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩ এর উপঅধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন এসব কথা বলেন।
মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন বলেন, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের জনসাধারণ ট্রেনে ভ্রমণ করে থাকে। কিন্তু কিছু দুষ্কৃতকারী ও টিকিট কালোবাজারি চক্রের কারণে সাধারণ মানুষ স্বস্তিকরভাবে টিকিট পেতে পারে না। অনলাইনে টিকিট পাওয়া না গেলেও কালোবাজারে অতিরিক্ত মূল্যে টিকিট বিক্রি হতে দেখা যায়।
তিনি বলেন, টিকিট কালোবাজারিরা বিভিন্ন কৌশলে ট্রেনের টিকিট অগ্রিম সংগ্রহ করে অবৈধভাবে মজুদ করে রাখে এবং পরবর্তীতে সাধারণ যাত্রীদের কাছে ২-৩ গুণ বেশি দামে বিক্রি করে।
র্যাব-৩ জানায়, বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার সদস্যদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে, গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়ে টিকিট কালোবাজারি চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়।
বুধবার (২৬ মার্চ) দিবাগত রাতে রাজধানীর খিলগাঁও বনশ্রী এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের সদস্য রিয়াজুল ইসলামকে (২৯) গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যমতে, ২৭ মার্চ ভোরে র্যাব-১১ এর সহায়তায় চক্রের মূলহোতা সেলিমকে (৫৩) রাজধানীর ডেমরা থানার ডগাইর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর সেলিমের তথ্যের ভিত্তিতে রকমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে অভিযান চালিয়ে আরও ৪ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ৮২টি ট্রেনের টিকিট, ৯৫টি মোবাইল সিম, ১০টি মোবাইল ফোন, ১টি এনআইডি, ১টি ঘড়ি, ৪টি এটিএম কার্ড, ১টি সিপিইউ উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃতরা দীর্ঘদিন ধরে পরস্পর যোগসাজশে অনলাইনে সস্তায় টিকিট কিনে সাধারণ যাত্রীদের কাছে গোপনে এবং অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি করত। তারা ট্রেন ছাড়ার ৩/৪ ঘণ্টা আগে থেকে টিকিট বিক্রির তৎপরতা শুরু করত, এবং ট্রেন ছাড়ার সময় যত ঘনাতো, টিকিটের দাম তত বৃদ্ধি পেত।
গ্রেপ্তার রিয়াজুল ইসলাম জানান, তিনি এসএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন এবং কম্পিউটার ও গ্রাফিক্স ডিজাইন সম্পর্কে ভালো অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি সেলিমের প্ররোচনায় অবৈধ টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে যুক্ত হন।
গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।