সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে ছেলে আব্দুল করিমের (১৮) লাশ বস্তায় ভরে টয়লেটে বালিচাপা দিয়ে ফেলে রেখে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছে সংরক্ষিত নারী সদস্য প্রার্থী মা করুনা বেগম এবং বাবা আলহাজ। দুদিন পর বাবার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার বিকেলে পুলিশ টয়লেট থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
ঘটনাটি ঘটেছে শাহজাদপুর উপজেলার নরিনা ইউনিয়নের নরিণা পুর্বপাড়া গ্রামে। এ ঘটনায় মা ও বাবাকে আটক করা হয়েছে। মা করুনা বেগম ৪র্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ওই ইউনিয়নে সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিদ মাহমুদ খান আটক মা-বাবার বরাত দিয়ে জানান, আব্দুল করিম মাদকদ্রব্য ড্যান্ডিসহ বিভিন্ন নেশায় আসক্ত ছিল। মঙ্গলবার রাতে খাওয়া শেষে করিম তার ঘরে শুয়ে পড়ে। পরদিন সকালে করিমকে ডাকাডাকি করলেও কোনো সাড়া পায় না। পরে ঘরে উকি দিয়ে তার লাশ ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। পরে স্বামী-স্ত্রী মিলে করিমের লাশ নামিয়ে টয়লেটের সেপটিক ট্যাকে বস্তায় ভরে বালিচাপা দিয়ে ফেলে রাখে।
তিনি আরো জানান, দুদিন পর বিবেকের তাড়নায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে করিমের বাবা আলহাজ্ব বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে অবহিত করেন। পরে সংবাদ পেয়ে শুক্রবার বিকেলে ওই বাড়িতে পৌছে টয়লেটের মধ্য থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। একই সাথে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মা-বাবাকে আটক করা হয়েছে। তিনি বলেন, এ ঘটনায় জিডি দায়েরের পর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে বলা যাবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা।
সদস্য প্রার্থী মা করুনা বেগম জানান, তাদের এক ছেলের বউ প্রায় দুই বছর আগে চিঠি লিখে আত্মহত্যা করেছিল। ওই সময় তারা আর্থিকভাকে সর্বশ্বান্ত হয়ে পড়েছিল। তাই ছেলে আত্মহত্যা করায় নতুন করে ঝামেলায় পড়ে বসতভিটা হারানোর ভয়ে এ কাজ করেন। বাবা আলহাজ্ব জানান, কষ্ট বুকে চাপা দিয়ে ছেলের লাশ টয়লেটে রেখে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছি। কিন্তু দুদিন পর মানসিকভাবে সহ্য করতে না পেরে চেয়ারম্যানকে পুরো ঘটনা জানিয়েছি।
ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম জানান, আব্দুল করিমের বাবার মুখে বিষয়টি জানতে পেরে হতভম্ব হয়ে পড়েছি। পরে বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করা হয়।