বিভিন্ন মামলার আসামিদের থানায় ধরে আনতে পুলিশ সদস্য ব্যবহার করে থাকেন হাতকড়া। চোরদের হাত থেকে মোটরসাইকেলের নিরাপত্তা নিশ্চিতে তালা হিসেবে সেই হাতকড়া ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে শরীয়তপুরের পালং থানার এএসআই মাসুদ রানার বিরুদ্ধে। নিজের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের হাইড্রোলিক প্লেট হাতকড়া দিয়ে তালা মেরেছেন তিনি। এমনকি নম্বর প্লেটের স্থানে পুলিশ লিখে রেখেছেন। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে এমন একটি ভিডিও।
মঙ্গলবার (৭ মে) দুপুরে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে হাতকড়া দিয়ে তালাবদ্ধ অবস্থায় পুলিশের মোটরসাইকেলটি দেখতে পাওয়া যায়। ঘটনাটি ঘটেছে শরীয়তপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিনগর এলাকায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শান্তিনগর এলাকার মালয়েশিয়া প্রবাসী আল-আমিন মোল্লার বাসায় ভাড়া থাকেন পালং মডেল থানার এএসআই মাসুদ রানা। তিনি বাসার সামনে তার মোটরসাইকেলটি রাখেন।
এ সময় তিনি আসামি ধরার জন্য ব্যবহৃত হাতকড়া দিয়ে মোটরসাইকেলের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সামনের হাইড্রোলিক প্লেট তালা মেরে রাখেন। তার মোটরসাইকেলের পেছনে নেই নম্বর প্লেট। লেখা রয়েছে পুলিশ। প্রায় সময় তিনি এই কাজ করে থাকেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আশিকুর রহমান বলেন, আমি এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিনই যাতায়াত করি। মাঝে মধ্যেই দেখি হাতকড়া দিয়ে মোটরসাইকেলের সামনের চাকায় তালা দেওয়া থাকে। মোটরসাইকেলটির পেছনে নম্বর প্লেটও নেই। নম্বর প্লেটের স্থানে লেখা রয়েছে পুলিশ। পুলিশ সদস্যের এমন কর্মকাণ্ড কখনওই আশা করা যায় না।
হাতকড়া দিয়ে মোটরসাইকেলের সামনের চাকায় তালা মারার বিষয় জানতে চাইলে পালং থানার এএসআই মাসুদ রানা মুঠোফোনে হাসি দিয়ে বলেন, ‘হোন্ডা চুরি হয়ে যায়। লক ভেঙে চুরি করে নিয়ে যায় চোররা। এ জন্যই হাতকড়া দিয়ে তালা মেরে রাখি মোটরসাইকেলটি।’
শরীয়তপুর জেলা জজ আদালতের অ্যাডভোকেট সহিদুল ইসলাম সজীব বলেন, বেঙ্গল পুলিশ রেগুলেশন, প্রবিধান-৩৩০ এ হাতকড়ার ব্যবহার সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সেখানে ৩৩০ (ই) বলা আছে, হাতকড়া সবসময় ব্যবহার উপযোগী রাখতে হবে। কোনো পুলিশ সদস্য পেশাগত কাজের বাইরে ব্যক্তিগত কাজে এটি ব্যবহার করতে পারবেন না।
জানতে চাইলে শরীয়তপুর জেলা সুপার মো. মাহবুবুল আলম বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা নেই। আমি আপনার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। যদি এরকম কোনো ঘটনা ঘটে থাকে সেক্ষেত্রে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।