পরিবারের সদস্যদের মধ্যে অস্বাভাবিক ও অবাধ যৌনতার কারণে প্রাণ গেল চারজনের। এর মধ্যে তিনজন পরিবারের সদস্য। ৩ টি প্রাণসহ মোট ৪ জনের প্রাণ চিরতরে ঝরে গেল! এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অনেক তথ্য জানা গেছে, তা খুবই ‘অস্বাভাবিক’।
রাজধানীর কদমতলীতে বিষ খাইয়ে মা, বাবা ও বোনকে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার মেহজাবিন ইসলাম মুন একাই খুনের দায় স্বীকার। হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন তিনি। এর পেছনের ঘটনা ভয়াবহ।
মাসুদের দ্বিতীয় বিয়ে ও মা-মেয়ের অনৈতিক সম্পর্ক
দুই মেয়ে মেহজাবিন ইসলাম মুন ও জান্নাতুল ইসলাম মোহিনীকে নিয়ে সুখের সংসার কাটাচ্ছিলেন মাসুদ রানা ও মৌসুমী ইসলাম। নিজের আয়টা আরেকটু বাড়ালে বোধহয় সুখ আরো বাড়বে, এমন চিন্তাভাবনা থেকে বিদেশ পাড়ি জমান মাসুদ। কিন্তু সেখানে গিয়ে আরেক বিয়ে করেন মাসুদ।
বিদেশ গিয়ে প্রথম কয়েকমাস টাকা পাঠালেও দ্বিতীয় বিয়ের পর বন্ধ করে দেন মাসুদ। এতে স্কুল পড়ুয়া দুই মেয়েকে নিয়ে বিপদে পড়ে যান মৌসুমি। ওই সময়ে সুযোগে অনেকেই পুরুষশূণ্য পরিবারটিতে কুনজর দিতে থাকেন। যখন পেটে ভাত জোটে না, তখনই কুপ্রস্তাবে রাজি হন মৌসুমি।
বিভিন্ন পুরুষের সঙ্গে নিজ বাসাতেই সময় কাটানো শুরু করেন মৌসুমি। ধীরে ধীরে মেয়েরা বড় হয়। তার ‘কাষ্টমারদের’ নজর পড়ে মেয়েদের দিকে। কাড়ি কাড়ি টাকার লোভ দেখানো হয়। এক এক পর্যায়ে নিজের বড় মেয়ে মেহজাবিন মুনকেও জোর পূর্বক দেহ ব্যবসায় সম্পৃক্ত করান। এরপর ছোট মেয়ে জান্নাতুল ইসলাম মোহিনীকে দিয়ে অনৈতিক কাজ করান।
নতুন চরিত্র আমিনুল!
দুই মেয়ে পড়াশোনায় ভালো হওয়ায় তাদের জন্য এক গৃহশিক্ষক রাখেন। তার নাম আমিনুল ইসলাম। তিনি সহসাই তাদের অনৈতিক সম্পর্কের কথা টের পান। এক পর্যায়ে তিনিও ছাত্রী মেহজাবিনকে জোর করে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করান।
ঘটনা এখানেই শেষ হয়। আমিনুলের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তার মা মৌসুমিও। নিয়মিতই তাদের সঙ্গে মেলামেশা ছিল আমিনুলের। আরে সেসব ভিডিও গোপনে ধারণ করেন ওই শিক্ষক।
জানা গেছে, ওই ভিডিও দেখিয়ে মা মৌসুমি ও মেয়ে মেহজাবিনের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক চালিয়ে যান আমিনুল। এমনকি তিনি মুনের ছোট বোন জান্নাতুল ইসলাম মোহিনী ও তার এক আত্মীয়ের সঙ্গেও শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে ফেলেন।
ছাত্রী মেহজাবিন মুন, ছাত্রীর মা মৌসুমী ইসলাম এবং ছাত্রীর ছোট বোন জান্নাতুল ইসলাম মোহিনীর সঙ্গে আমিনুলের অবাধ যৌনতা চলতে থাকে। এর মধ্যেই মেহজাবিন মুনকে শফিকুল নামের এক জনের সঙ্গে বিয়ে দেন মা মৌসুমী। এতে ক্ষিপ্ত হন অবাধ যৌনতার সুবিধাভোগী গৃহশিক্ষক আমিনুল। তিনি ছাত্রী মেহজাবিনের সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও তার স্বামীকে দেখান। এতে মুনের সংসারে দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। পরিস্থিতিতে মা মৌসুমীও তখন আমিনুলের ওপর বিরক্ত হতে থাকেন।
জানা যায়, মা, দুই মেয়ে, স্বামী শফিকুল ও খালা শিউলী আক্তার পরিকল্পনা করে গৃহশিক্ষক আমিনুলকে বাসায় ডেকে নিয়ে গত ৫ বছর আগে হত্যা করেন। ওই ঘটনায় মেহজাবিন মুনকে আসামি করা হলেও পরে তার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পায়নি ঢাকা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ। যে কারনে শফিকুল, মৌসুমী এবং শিউলীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। যে মামলা তারা ৩ জন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে জেল খেটে জামিনে বেরিয়ে আসেন।
উল্লেখ্য, শনিবার সকালে কদমতলীর মুরাদপুর রজ্জব আলী সরদার রোডের পাঁচতলা বাড়ির দ্বিতীয়তলা থেকে মাসুদ রানা (৫০), তার স্ত্রী মৌসুমী ইসলাম (৪০) ও মেয়ে জান্নাতুল ইসলাম মোহিনীর (২০) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। অচেতন অবস্থায় মেহজামিনের স্বামী শফিকুল ইসলাম ও মেয়ে তৃপ্তিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়।
যেখানে ইসলাম নেই, সেখানে এমন হওয়াটা স্বাভাবিক।