আশুলিয়ায় চলন্ত যাত্রীবাহী বাস থেকে এক যাত্রীকে ধাক্কা দিয়ে মহাসড়কে ফেলে দেওয়ার অভিযোগে সুপারভাইজার ও হেলপারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় তুহিন পরিবহনের দুরপাল্লার বাসটিও জব্দ করা হয়েছে। আহত যাত্রী জহিরুল ইসলাম জহিরকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিউতে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ভুক্তভোগী পরিবার বাদী হয়ে বাসের তিনজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
এর আগে বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় ঢাকামুখী তুহিন পরিবহনের দুরপাল্লার বাস থেকে ওই যাত্রীকে ফেলে দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী যাত্রী জহিরুল ইসলাম জহির চট্টগ্রাম জেলার রাউজান থানার খৈয়াখালী গ্রামের আব্দুর রহমান কোম্পানীর ছেলে। তিনি ব্যবসায়ীক কাজে আশুলিয়ার জিরানীতে বসবাস করে আসছিলেন। গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- তুহিন পরিবহনের বাসটির সুপারভাইজার রাজশাহী জেলার রাজপাড়া থানার তেরখাদিয়া গ্রামের মৃত আব্দুর রউফের ছেলে মো. আব্দুল মজিদ (৫০), বাসের হেলপার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সদর থানার আলীনগর গ্রামের খাইজুদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে মো. মানিক (৪৮)। গাড়িটির চালক চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সদর থানার ইউসুফ (৩২) এখনো পলাতক রয়েছেন।
এজহার সূত্রে জানায় যায়, বুধবার রাত ১২টার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইল থেকে ঈদ উপলক্ষ্যে চট্টগ্রামে বাড়ির উদ্দেশে তুহিন পরিবহনের চট্টগ্রামগামী বাসে ওঠেন। বাসটি বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর হয়ে যাচ্ছিল। এসময় বাসে তিনজন ছাড়া অন্য কোনো যাত্রী না থাকায় ছিনতাই হতে পারে এমন সন্দেহ করে নেমে যাওয়ার চেষ্টা করেন। বাসের সুপারভাইজার ও হেলপার তাকে নামতে বাধা দেন। জোর করে নামার চেষ্টা করলে তাকে চলন্ত বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
তুহিন পরিবহনের বাসে থাকা যাত্রী জনি হোসেন বলেন, আমি নাটোর থেকে কুমিল্লার উদ্দেশে যাচ্ছিলাম। বাসে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। হঠাৎ এক যাত্রীর চিৎকারে ঘুম ভাঙে। দেখি গেটের দিকে সুপারভাইজার ও হেলপার এক যাত্রীকে ধরে রেখেছে। একটু পড়ে দেখি যাত্রীটা সড়কে পড়ে গেছে।
সড়কে থাকা প্রত্যক্ষদর্শী মনির হোসেন বলেন, বাইপাইল মোড়ে আমাদের মার্কেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ একটি চলন্ত বাসের গেটে দেখি এক যাত্রী চিৎকার করছেন। আমরাও ডাক চিৎকার দিয়ে বাসটি থামানোর জন্য চেষ্টা করি। এর মধ্যই দেখি গেটে থাকা যাত্রীকে ফেলে দিল। বাস না থামিয়ে দ্রুত গতিতে চলে যায়। পরে মোটরসাইকেল করে স্থানীয়রা বাসটিকে আটক করে। বাস থেকে ভুক্তভোগীর একটি ব্যাগও পাওয়া যায়। পরে পুলিশে খবর দেই।
এদিকে, আহত যাত্রী মাথার পেছনে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। রক্তাক্ত ও মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মামলার বাদী ও আহতের চাচাতো ভাই মুজাহের আলম বলেন, খবর পেয়ে চট্টগ্রাম থেকে আশুলিয়ায় থানায় এসেছি। আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছি। আমার ভাই সাভারের একটি হাসপাতালের আইসিউতে ভর্তি আছে। এখনো জ্ঞান ফিরেনি। অবস্থা ভালো না।
আশুলিয়া থানার এসআই মাসুদ আল মামুন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে বাসের সুপারভাইজার ও হেলপারকে গ্রেপ্তার করেছি। তবে চালক পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিদের শুক্রবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হবে।