English

18 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৪
- Advertisement -

গোয়েন্দা কবজায় পিয়াসার ব্ল্যাকমেইলিংয়ের ১৭ ভিডিও, মৌর ১১ বিয়ের তথ্য

- Advertisements -

গোয়েন্দা কবজায় ফারিয়া মাহবুব পিয়াসার ব্ল্যাকমেইলিংয়ের ১৭ ভিডিও। এসব ভিডিওতে দেশের অনেক প্রভাবশালীর উপস্থিতি থাকায় রীতিমতো বিব্রতবোধ করছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। বলছেন, ভিডিওগুলো প্রকৃতপক্ষেই আসল কিনা তা যাচাই-বাছাই করার প্রয়োজন রয়েছে। এসব ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলারও প্রয়োজন। অন্যদিকে, গরু আমদানির নামে মাদক চোরাচালান ব্যবসায় পিয়াসার সম্পৃক্ততার বিষয়টি উঠে এসেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজধানীর ৩০০ ফিট এলাকায় গ্রেফতার পিয়াসা তার ‘ডেইরি সান’ নামের গরুর ফার্মের ব্যানারে মিয়ানমার থেকে গরু আমদানি করতেন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে এসব গরুর পেটে ইয়াবার চালান আনতেন তিনি। সোনা চোরাচালান সিন্ডিকেটের সঙ্গেও পিয়াসা সম্পৃক্ত ছিলেন।

গোয়েন্দা সূত্র বলছে, অভিজাত ফেরারি, বিএমডব্লিউ এবং মার্সিডিস গাড়ি ব্যবহার কিংবা আলিশান জীবন যাপনের জন্য টাকার উৎসের বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি পিয়াসা। তবে একটি শো-রুমে রাখা পিয়াসার ফেরারি গাড়িটি জব্দ করা হবে। বারিধারায় আড়াই লাখ টাকায় ৪ হাজার স্কয়ার ফিটের বাসার সিসিটিভি ক্যামেরায় ডিভিআর সংগ্রহ করেছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। সেই বাসায় মাঝেমাঝেই বসত নাচ গানের ডিজে পার্টি। বসানো হতো সুন্দরীদের হাট। অতিথিরা পছন্দ অনুযায়ী বেছে নিতেন। কাস্টমস বিভাগের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর মেয়ে পিয়াসার লেখাপড়া মাত্র উচ্চমাধ্যমিক। অল্প শিক্ষিত হয়েও একটি টেলিভিশন চ্যানেলের ঊর্ধ্বতন পদ বাগিয়ে নেন তিনি। চ্যানেলটির দুই শতাংশ শেয়ারও কবজায় নিয়েছিলেন পিয়াসা। যদিও অল্প দিনে পিয়াসা বিভিন্ন পেশার অনেককে ব্ল্যাকমেইল করার অভিযোগ ওঠায় তাকে সেই পদ থেকে বরখাস্ত করে কর্তৃপক্ষ। পরে চ্যানেলটিতে তার দুই শতাংশ শেয়ারও হস্তান্তর করতে বাধ্য করা হয় পিয়াসাকে।

ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, পিয়াসাকে পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন এমন অনেকের নাম আমরা পেয়েছি। পিয়াসা তাদের নাম বলেছেন। পিয়াসার কাছ থেকে স্পর্শকাতর কিছু ডকুমেন্টস উদ্ধার করা হয়েছে। বিএনপিপন্থী দুই শীর্ষ ব্যবসায়ীর নাম বিভিন্নভাবে উঠে আসছে। তারা খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলেন পিয়াসার। এখন এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।

সূত্র বলছে, শুধু মাদক নয়, অস্ত্র ব্যবসায়ও পিয়াসা জড়িয়েছিলেন এমন অভিযোগও উঠেছে। পিয়াসা বিভিন্ন সময় ফেসবুক আইডিতে এসব ছবি পোস্ট করেছেন। তার এসব অবৈধ ব্যবসায় যাদের নাম উঠছে তাদের তালিকাও হচ্ছে। শিগগিরই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের ডাকা হবে। বর্তমানে কারাবন্দী তৎকালীন প্রভাবশালী পুলিশ কর্মকর্তা ডিআইজি মিজানের সঙ্গে বিশেষ সখ্যতার কারণে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের থোরাই কেয়ার করতেন পিয়াসা। ২০১৮ সালে বনানীতে এসবির পরিদর্শক মামুন খুনের ঘটনায় তার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠলেও তদন্তে পিয়াসার নাম আসেনি। ডিআইজি মিজানের কারণে ব্যক্তিগত শত্রুকে পুলিশি ভয় দেখাতেন এবং হেনস্তাও করতেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেছেন, অনেক প্রভাবশালীর সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে দীর্ঘদিন ধরেই ইয়াবা ব্যবসা করতেন পিয়াসা। ভারত এবং মিয়ানমার থেকে আমদানি করা গরুর পেটে করে তিনি ইয়াবা নিয়ে আসতেন।

মৌর ১১ বিয়ে, বিপুল টাকা হাতিয়েছেন সাবেক স্বামীদের কাছ থেকে

মাদক মামলায় গ্রেফতারের পর মডেল মৌ-এর সঙ্গে ভিআইপিদের সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। একই সঙ্গে অঢেল সম্পদের উৎস খুঁজে দেখছেন তারা। এরই মধ্যে তার বাসা থেকে জব্দ করা হয়েছে সিসিটিভি ফুটেজ। ডিবির তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মৌ ১১টি বিয়ে করেছেন। তার সর্বশেষ স্বামী একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক। ধনাঢ্যদের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করেছিলেন। তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ সম্পদ হাতিয়ে নেওয়ার পর আরেকজনের সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসতেন। সাবেক স্বামীরা মৌ-এর অপকর্ম সম্পর্কে সবই জানতেন। তার কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে অনেক সময় নিজেরাই তাকে তালাক দিতেন।

রবিবার রাতে পিয়াসার দেওয়া তথ্যে গ্রেফতার হয় আরেক মডেল মৌ আক্তার। মোহাম্মদপুরে পাঁচতলা আলিশান বাড়ি রয়েছে তার। নেক্সাস, পাজেরো ও টয়োটা ব্র্যান্ডের তিনটি দামি গাড়ি চালাতেন মৌ। অথচ তার দৃশ্যমান আয়ের উৎস নেই। মৌ মডেলিং পেশার আড়ালে ব্ল্যাকমেইলিং করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিতেন বলে অভিযোগ পেয়েছেন তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা। মাদক ও অনৈতিক ব্যবসায় তার সংশ্লিষ্টতার কিছু প্রমাণ ইতোমধ্যে গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে। তাকে গ্রেফতারের পর অনেক ভুক্তভোগীই পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বলে জানা গেছে।

ডিবি পুলিশের কাছে তথ্য আছে, মৌ-এর নিয়ন্ত্রণে অর্ধশত সুন্দরী তরুণী রয়েছেন। এসব তরুণীদের দিয়ে তিনি অর্থশালীদের টার্গেট করতেন। কৌশলে তাদের বাসায় নিয়ে আসতেন। মদ খাইয়ে অচেতন করে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি কিংবা ভিডিও ধারণ করতেন। পরে ওই ব্যক্তি যদি কথামতো কাজ না করতেন, তাহলে ভয় দেখানোর পাশাপাশি ছবি বা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিতেন। এভাবে অনেকের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। আর দরিদ্র পরিবারের সুন্দরী তরুণী, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্রীরা মৌ-এর প্রতারণা চক্রের সদস্য। তারা দিনের বেলা লোকচক্ষুর আড়ালে থেকে রাতে সক্রিয় হতেন। তার বাসায় গভীর রাত পর্যন্ত মাদক সেবনের পাশাপাশি চলত অসামাজিক কার্যকলাপ।

ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইমের এক কর্মকর্তা জানান, তিন দিনের রিমান্ডের প্রথম দিন মৌকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার এত সম্পদের উৎস কোথা থেকে, কী কারণে তার আগের সব সংসার ভেঙে গেছে এবং সব বিয়েতেই মোটা অঙ্কের কাবিন ছিল তার। বিয়ের ফাঁদ পেতে প্রতারণা করতেন কি না-এমন নানা বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কত দিন ধরে এবং এ পর্যন্ত কতজনকে ব্ল্যাকমেইল করেছেন এমন সব প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি মৌ।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন