নাটোরে শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগে ঢাকায় কর্মরত সিআইডি কর্মকর্তা খন্দকার আতিকুর রহমানের স্ত্রী সুমি বেগমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে নাটোর থানায় সুমি বেগমের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগী শিশুটির মা।
এর আগে গতকাল বুধবার বিকালে পরিবারের সঙ্গে ওই শিশুকে দেখা করাতে নিয়ে যান সুমি বেগম। এসময় তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে আত্মীয়-স্বজন জিজ্ঞাসা করলে সে টানা তিন বছর ধরে চলা নির্যাতনের কথা তুলে ধরে। এরপরই বিক্ষুব্ধ হয়ে পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী সুমি বেগম এবং শাশুড়ি দিলারা বেগমকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
পরিবারের সদস্যরা জানান, ওই শিশুটি তিন বছর আগে ঢাকায় সিআইডি পুলিশে কর্মরত উপ-পরিদর্শক খন্দকার আতিকুর রহমানের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ নেয়। এরপর থেকে আর তাকে বাবা-মায়ের সঙ্গে আর দেখা করতে দেওয়া হয়নি। প্রথম আট মাস নিয়মিত বাড়িতে বেতন পাঠানো হলেও পরে আর ঠিকমতো বেতনও দেওয়া হয়নি।
তারা আরও জানান, কাজে যোগ দেওয়ার এক মাস পর থেকেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গৃহকর্ত্রী সুমি ওই শিশুকে বকাঝকা ও নির্যাতন শুরু করেন। একপর্যায়ে তার শরীরে গরম আয়রন দিয়ে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়। এছাড়া প্লাস দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে চামড়াও তুলে ফেলা হয়। শিশুটির মাথা ও হাত-পায়ের আঙ্গুলসহ পুরো শরীর ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গেছে।
শিশুটি জানায়, কাজে একটু ভুল করলেই তাকে প্রচুর মারধর করা হতো। জোরে কান্না করলে আরও বেশি মারা হতো। তবে গৃহকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক তাকে মা বলে ডাকতেন এবং নিজের মেয়ের মতো আদর করতেন। এমনকি মারধর করার জন্য স্ত্রীকে বকাঝকাও করতেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শ্যামলীর পরিবার অনেকবার বলার পর বুধবার সুমি বেগম ও তার মা পাইকোরদোল গ্রামে আসে। এ সময় শিশু গৃহকর্মীর শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে গ্রামবাসী তাদের আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মো. তারেক জুবায়ের জানান, পুলিশের একটি টিম মেয়েটিকে উদ্ধার করে এবং নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত সুমি বেগম আটক করেছে। ঘটনার তদন্ত করে যা সামনে আসবে সেভাবেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আইন সবার জন্য সমান। এ ক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই।