পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় বিএনপির সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়েছে। উপজেলার তিনটি এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে আরো কিছু স্থানে। এতে পুলিশের ছোড়া টিয়ারসেল, রাবার বুলেটে বিএনপির অন্তত শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে দাবি করেছে বিএনপি।
দুপুর ১২টার দিকে শহরের টিঅ্যান্ডটি মোড়ে বিএনপি ও পুলিশের সংঘর্ষ চালাকালে এতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে যোগ দেয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও। পুলিশ ও আওয়ামী লীগ মিলে তাদের ওপর চড়াও হয়। ঘণ্টাখানিক চলে তিনপক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। বিএনপি নেতাকর্মীদের ইটপাটকেলের জবাবে পুলিশ টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছুঁড়ে পাল্টা জবাব দেয়। বিএনপির বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অনেকে হেলমেট পরে এ সংঘর্ষে অংশ নেয়। তখন তাদের বিভিন্ন ধরণের স্লোগান দিতে দেখা যায়।
একই ধরণের সংঘর্ষ হয় বরাটিয়া চৌরাস্তা মোড়েও। বিকেল ৩টার দিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আসে।
ঘটনাস্থল থেকে কিশোরগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আল আমিন সংঘর্ষের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিএনপির সামাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের অনুমতি ছিল না। তা সত্ত্বেও তারা পৌর এলাকায় মিছিল নিয়ে এলে বাধা দেয় পুলিশ। এ সময় পুলিশের ওপর হামলা চালায় বিএনপির নেতাকর্মীরা। পরে বাধ্য হয়ে পুলিশ টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছোঁড়ে।
তিনি বলেন, ইটপাটকেলের আঘাতে পুলিশের অন্তত ১৫ থেকে ২০ জন সদস্য আহত হয়েছে। ’
পুলিশ আরো বলেন, ‘এ পর্যন্ত দাঙ্গা-হাঙ্গামার অভিযোগ ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে। ’
বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ বিনা উসকানিতে হামলা করেছে। রাবার বুলেট ও টিয়ারগ্যাসে তাদের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। আহতদের বাজিতপুরের জহুরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. জালাল উদ্দিন অভিযোগ করেন, পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগের লোকজনও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এ হামলায় অংশ নেয়। এতে তাদের অন্তত শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। তাদের অনেকে আবার গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি নয়, পুলিশ ও আওয়ামী লীগ ইচ্ছেকৃতভাবে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করেছে। ’
পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সারোয়ার জাহান বিকেল ৪টার দিকে বলেন, ‘পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত ও পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। শহরের অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঠিক কত রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারগ্যাস ছোড়া হয়েছে তার হিসাব হয়নি। ’