চাঁদপুর শহরের ওয়ারলেস এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ বরকন্দাজের বাড়িতে কর্মজীবী বাবা মায়ের অনুপস্থিতিতে গৃহকর্মীকে টানা ১ বছর ধরে ধর্ষণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী।
শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) এসব কারণে বাসা থেকে পালিয়ে সড়কে এসে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই গৃহকর্মী। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে প্রাণে রক্ষা পান তিনি। এ ঘটনায় থানায় মামলা হলে পুলিশ অভিযুক্তের মাকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে বাবাসহ পালিয়েছে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী।
অভিযুক্ত আমজাদ মাহমুদ নিলয় (২১) ঢাকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, চাঁদপুর শহরের ওয়ারলেস এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ বরকন্দাজের বাড়িতে থাকেন চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এ কর্মরত আব্দুল মাজেদ ও শাহনাজ বেগম দম্পতি। তাদের বড় ছেলে আমজাদ মাহমুদ নিলয় (২১) রাজধানী ঢাকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় এখন বাবা মায়ের সঙ্গে থাকেন তিনি। তাদের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করেন এক তরুণী (২৪)।
অভিযুক্ত নিলয়ের বাবা-মা যখন অফিসে থাকেন, সে সময় যৌন নির্যাতনের শিকার হতেন ভুক্তভোগী ওই গৃহকর্মী। গত একবছর এই বিষয় নিয়ে নিলয়ের বাবা ও মাকে জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি ভুক্তভোগী গৃহকর্মী। সর্বশেষ গত ২৪ এপ্রিল ফের ধর্ষণের শিকার হন তিনি। এবারো বিষয়টি গৃহকর্তা-কর্ত্রীকে জানিয়ে বিচার চেয়েছেন ওই গৃহকর্মী। তবে আবারো অপবাদের মুখে পড়ে মারধরের শিকার হন তিনি।
শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) এসব কারণে বাসা থেকে পালিয়ে সড়কে এসে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই গৃহকর্মী। এ সময় স্থানীয়রা তা দেখে ফেলায় এই যাত্রায় রক্ষা পান তিনি। এমন ঘটনার পর বিষয়টি চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদের নজরে পড়ে। পরে তিনি ঘটনার ভুক্তভোগী তরুণীকে উদ্ধার করে সদর মডেল থানা পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।
পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বলেন, গৃহকর্মীকে যৌন নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত যেই হোক তাদের ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদ জানান, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী গৃহকর্মী তরুণীর কাছ থেকে বিস্তারিত শুনে ওই পরিবারের ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। শনিবার (২ মে) চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে গৃহকর্মীর। এর আগে মামলার প্রেক্ষিতে শহরের ওয়ারলেস এলাকার বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় নিলয়ের মা শাহনাজ বেগমকে আটক করা হয়েছে। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।