পরদিন মেয়েটির সন্ধান পান মা। এ ঘটনায় ওসির সহায়তায় কিশোরীকে নিয়ে ওই ধর্ষককে খুঁজে বের করা হয়। প্রতিবন্ধী কিশোরী ইশারায় ধর্ষককে চিনিয়ে দেয়। মামলা দায়ের হলে অভিযুক্ত নুরুল আমীনকে (২৬) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) রাতে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার হাসপাতাল রোডের একটি মার্কেটে। পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে মামলার পর ওই অভিযুক্তকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে ও ধর্ষণের শিকার কিশোরীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
অভিযুক্ত নুরুল আমীন ঈশ্বরগঞ্জ হাসপাতাল রোডের মারফত প্লাজায় অবস্থিত আইটি পার্ক নামক একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক ও প্রশিক্ষক। তিনি উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের পাঁচপাড়া গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে।
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, ওই বাকপ্রতিবন্ধী কিশোরীর বাড়ি উপজেলার জাটিয়া ইউনিয়নের একটি গ্রামে। গত ২০ জানুয়ারি কিশোরী তার নানির সাথে প্রতিদিনের মতো ঈশ্বরগঞ্জ সদরে ভিক্ষা করতে আসে। একসময় নানির কাছ থেকে হারিয়ে যায় সে। এক পর্যায়ে কিশোরী ঈশ্বরগঞ্জ হাসপাতাল রোডের মারফত প্লাজার দ্বিতীয় তলায় যায়। সেখানে দুপুরের পর ঢুকে পড়ে একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সেন্টারে। পরে ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক নুরুল আমীন তাকে একা পেয়ে টাকার লোভ দেখিয়ে একটি কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করেন।
পরে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে নুরুল আমীন কিশোরীকে কিছু টাকা হাতে ধরিয়ে দেন। নিচে এনে একটি অটোরিকশায় চেপে সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে মধুপুর বাজারেরর কাছে রেখে আসেন তিনি।
মামলার এজাহার থেকে আরো জানা যায়, কিশোরীর মা লিখিতভাবে জানিয়েছেন, তার মেয়েকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে পরদিন ওই বাজারের কিছু দূরে আছে বলে জানতে পারেন।
পরে সেখান থেকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে জানতে পারেন, এক ব্যক্তি তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছেন। পরে মেয়েকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করে চার দিন পর ধর্ষকের ঠিকানা পান মা। এ অবস্থায় গত বুধবার সকালে ঘটনাস্থলের সন্ধান পেয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তর (ওসি) কাছে যান।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি পীরজাদা মোস্তাছিনুর রহমান জানান, তিনি ঘটনা সম্পর্কে অবহিত হয়ে ওইদিন রাতেই কিশোরীকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তার দেখানো অভিযুক্তকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। নির্যাতিতা ধর্ষককে চিহ্নিত করে। এক পর্যায়ে সে আকার-ইঙ্গিতে ঘটনার বর্ণনা দেয়। কোনো উপায় না দেখে অভিযুক্তও ঘটনার সত্যতা স্বীকার করতে বাধ্য হন।
পরে বৃহস্পতিবার সকালে মামলা নিয়ে অভিযুক্তকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে ও ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে জেলা শহরের একটি মুক ও বধির বিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ শিক্ষকের সহায়তায় জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।