রাউজানের নোয়াজিষপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য গোলাম আকবর খোন্দকার সমর্থিতদের ইফতার মাহফিলকে কেন্দ্র করে দুই দফায় পাল্টাপাল্টি হামলা, সংঘর্ষ, গুলিবর্ষণ এবং ৭টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে গোলাম আকবর গ্রুপের একজন গুলিবিদ্ধ এবং গিয়াস কাদের গ্রুপের একজনকে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহতসহ উভয়পক্ষের ১৩-১৪ জন আহত হয়েছে।
গোলাম আকবর গ্রুপের ইফতার মাহফিলের প্যান্ডেল ও অন্যান্য জিনিসপত্র ভাঙচুর করা হয়েছে। পণ্ড হয়েছে সেই ইফতার মাহফিল।এতে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দীন কাদের চৌধুরী গ্রুপের নেতাকর্মীদের ৭টি মোটরসাইকেল সম্পূর্ণ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং তাদের বেশ কয়েজনকে মেরে জখম করার অভিযোগ করা হয়েছে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি গ্রুপের নেতাকর্মীরা একটি বাড়িতে আটকে পড়েন। বুধবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় নোয়াজিষপুর ইউনিয়নে এবং গহিরায় এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর থেকে উত্তাল হয়ে পড়েছে নোয়াজিষপুর।
রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঘটনার প্রতিবাদে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দীন কাদের চৌধুরী গ্রুপের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এসব ঘটনার জন্য দুই পক্ষই পরস্পরকে দায়ী করেছেন। পুলিশ বলছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য গোলাম আকবর খোন্দকার পক্ষের সভাপতি অধ্যাপক জসিম উদ্দীন চৌধুরী অভিযোগ করেন ‘নোয়াজিষপুর ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্কন সংগঠনের পূর্ব নির্ধারিত ইফতার ও দোয়া মাহফিল ছিল নোয়াজিষপুর স্থানীয় চৌধুরী ঘাটা ঈদগাহ মাঠে।
গুলিবিদ্ধসহ আহতদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রতিপক্ষের সেলিম উদ্দীন, ফোরকানসহ বেশ কয়েজনের নেতৃত্বে এই ঘটনা ঘটানো হয়। আরেকটি সূত্র জানায়, ঘটনার সময় উভয় গ্রুপ সংঘর্ষে লিপ্ত হন। দ্বিতীয় দফা ঘটনা ঘটে সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে রাউজান নোয়াজিষপুর ইউসুফে দীঘির পাড়ে। গিয়াস কাদের গ্রুপের উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক নুরুল হুদা চেয়ারম্যান ও উত্তরজেলা যুবদল নেতা সেলিম উদ্দীন, উপজেলা যুবদল নেতা দিদারুল আলম অভিযোগ করেন ‘আমাদের নেতাকর্মীরা পার্শ্ববর্তী চিকদাইর ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ইফতার মাহফিলে গিয়েছিল।
সেখান থেকে ৭টার দিকে মোটরসাইকেলযোগে ফেরার পথে ইউসুফের দীঘি এলাকায় গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারীরা নোয়াজিষপুর ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারী ফোরকান সিকদার, রুবেল, শ্যামল, হুমায়ুন, ফয়সাল আরফাতের নেতৃত্ব ১০-১৫ জনের একটি গ্রুপ অস্ত্রশস্ত্র ও রামদা কিরিচ নিয়ে হামলা করে। হামলায় যুবদল কর্মী মোরশেদ, সেকান্দর, ফোরকান, জেলা যুবদল নেতা সেলিম উদ্দিন, শাহাবুদ্দিন, জালালসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। তাদের মধ্যে মোরশেদকে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করা হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকেসহ আহত বেশ কয়েকজনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আরেক সূত্র জানায় দ্বিতীয় দফায়ও উভয় গ্রুপে মারামারি হয়।
রাউজান থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, ‘ইফতারের আগে বিকেল ৪টায় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মারামারিতে লিপ্ত হওয়া বিএনপির দুই পক্ষকে নিবৃত্ত করি। পুলিশ ইফতারের জন্য থানায় ফিরে আসলে সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে আবারও তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ৭টি মোটরসাইকেল সম্পূর্ণ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ৭-৮ জন আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে ঘটনার পর গোলাম আকবর গ্রুপের কয়েকজন নেতাকর্মী একটি বাড়িতে আটকা পড়েন বলে জানা গেছে।